সালাহ উদ্দিনের অন্তর্ধান- রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত

এক সপ্তাহ পরও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদের নিখোঁজ রহস্য উদ্ঘাটন না হওয়া গভীর উদ্বেগজনক। আমরা আশা করব, তাঁর হদিস দিতে আগামী ৮ এপ্রিলে হাইকোর্ট বিভাগের শুনানি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। তাঁকে খুঁজে পেতে সরকার যে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণে নিয়োজিত রয়েছে, জনমনে তেমন ধারণা তৈরি করা সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ—উভয়ের জন্য জরুরি। কিন্তু সে ক্ষেত্রে দুঃখজনকভাবে বিরাট ঘাটতি চলছে বলে মনে হয়। যদিও হাইকোর্ট বিভাগের তরফে দ্রুত রুল জারির ঘটনা হেবিয়াস কর্পাসের মামলা হিসেবে জনমনে কিছুটা আস্থা সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্র ও জাতীয় নিরাপত্তার দিক থেকে অতীতের অন্যান্য নিখোঁজের ঘটনার চেয়ে সালাহ উদ্দিনের অন্তর্ধান বাড়তি গুরুত্ববহ। কারণ, তিনি একটি চরম রাজনৈতিক আন্দোলনের সময়ে দেশের প্রধান বিরোধী দলের সক্রিয় এবং বলা যায় একমাত্র মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছিলেন। সুতরাং তাঁর গতিবিধির ওপর গোয়েন্দাসহ একাধিক সংস্থার সার্বক্ষণিক নিবিড় নজরদারি অন্তত গত জানুয়ারি থেকে ধারাবাহিকভাবে থাকাটাই স্বাভাবিক বলে ধরে নিতে হবে। এ রকম একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কোনো খোঁজ না থাকার বিষয়ে সরকারি সংস্থাগুলোর নির্বিকার বা অজ্ঞতার মনোভাব সাধারণভাবে বিশ্বাসযোগ্য নয়। আট বস্তা ময়লার সঙ্গে তাঁকে পাচার করার জবাব খালেদা জিয়াই দিতে পারবেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে তির্যক মন্তব্য করেছেন, তা খুবই পীড়াদায়ক। সালাহ উদ্দিনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি রাজনীতির জন্য এক অশনিসংকেত। পুলিশের সদর দপ্তর ও চারটি শাখার দাবি, তিনি পুলিশের কাছে নেই। সালাহ উদ্দিনের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে ডিবি পরিচয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পুলিশের দায়িত্ব হচ্ছে কারা তাঁকে নিয়ে গেছে, তাদের চিহ্নিত করা বা তাঁকে খুঁজে বের করে এই অভিযোগকে ভুল প্রমাণিত করা। আমরা তাঁকে দ্রুত খুঁজে বের করা এবং এর আগে এ নিয়ে বক্তৃতা-বিবৃতি প্রদানে সংশ্লিষ্ট সব মহলের কাছে দায়িত্বশীলতা আশা করি।

No comments

Powered by Blogger.