সিরিয়ায় ধ্বংস হচ্ছে সভ্যতা

সিরিয়ার প্রাচীন শহর পালমিরার একাংশ। দেশটিতে চলমান
যুদ্ধে পালমিরার মতো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যময় অনেক স্থাপনা
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত ১৪ মার্চ তোলা ছবি। এএফপি
সিরিয়ায় চলমান যুদ্ধে প্রায় ৩০০ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যময় স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থাপনাগুলোর মূল্যবান জিনিসপত্রও লুটপাট হয়েছে। এসব স্থাপনা মানবসভ্যতার প্রথম দিকের ইতিহাস জানান দিত। জাতিসংঘের প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইউনিটার) গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়। খবর এএফপি ও রয়টার্সের। প্রতিবেদনে বলা হয়, উপগ্রহের মাধ্যমে সিরিয়ার ২৯০টি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যময় স্থাপনা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে ১৮৯টি স্থাপনা। আর ৭৭টি স্থাপনা যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিটার বলেছে, সিরিয়ায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এই বিশাল ক্ষয়ক্ষতি উদ্বেগজনক বার্তা দেয়। মানবজাতির জন্যই এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। প্রতিবেদনে জানানো হয়, ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এসব স্থাপনার মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনাও রয়েছে। আলেপ্পোর ঐতিহাসিক উমায়াদ মসজিদ,
মরুশহর পালমিরার মন্দিরসহ প্রাচীন বেশ কিছু স্থাপনা ব্যাপক হামলার শিকার হয়েছে। ইউনিটার বলছে, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী কিংবা বিরোধীরা, যে যেখানে পেরেছে প্রাচীন দুর্গগুলো নিজেদের সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছে। এ কারণে প্রতিপক্ষের হামলার লক্ষ্যস্থলও ছিল এগুলো। উদাহরণ হিসেবে আলেপ্পোয় অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন একটি দুর্গের কথা বলা হয়। সরকারি বাহিনী এটাকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে। এ ছাড়া প্রায় ৯০০ বছরের পুরোনো ক্রাক দেশ চেভ্যালিয়ার্স দুর্গে অবস্থান নিয়েছিল বাশারবিরোধী বাহিনী। টানা কয়েক মাস বোমা হামলা চালানোর পর গত মার্চে এর দখল নিতে সক্ষম হয় সরকারি বাহিনী। কিন্তু হামলায় এটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সিরিয়ার প্রাচীন নিদর্শন ও জাদুঘরগুলোর দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রধান কর্মকর্তা মামুন আবদুল করিম বলেন, প্রাচীন অনেক নিদর্শন সুরক্ষায় সেগুলো বিশেষ গুদামে রাখা হয়েছে। এসব নিদর্শনের মধ্যে ১০ হাজার বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক নিদর্শনও রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদত্যাগের দাবিতে ২০১১ সালে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা গৃহযুদ্ধে গড়ায়।

No comments

Powered by Blogger.