তাঁবুর জীবন বৃষ্টি হলে কষ্ট বাড়ে

টাইগারপাস নব দিগন্ত ক্লাব মাঠ। মাঠে সারিবদ্ধ তাঁবু। মধ্যে চলাচলের পথ। পথের বেশির ভাগ অংশজুড়েই কাদা-পানি। কিছু তাঁবুর ভেতরেও একই অবস্থা। টানা বর্ষণে ভোগান্তি বেড়েছে তাঁবুর বাসিন্দাদের।
গত মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পাহাড়ের পাদদেশের বসবাসকারী লোকজনকে এখানে অস্থায়ী পুনর্বাসন করেছে জেলা প্রশাসন।
গত রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশির ভাগ তাঁবুর ভেতর পানি ঢুকেছে। বাসিন্দারা কেউ কেউ ইট বিছিয়ে পানির হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে। তা-ও ইটের ফাঁক দিয়ে কাদা-পানি উঠে যাচ্ছে। তবে কয়েকটি তাঁবু ভালো অবস্থায় আছে। এসব তাঁবুর চারপাশে মাটি কেটে নালা ও নিচু আকারের মাটির সীমানা তৈরি করেছে বাসিন্দারা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৃষ্টির কারণে তাঁবুতে পানি ঢুকে যাওয়ায় বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বেড়েছে পোকামাকড়ের উপদ্রব; পাশাপাশি এখানে সরবরাহ করা খাওয়ার পানিতে ময়লা-আবর্জনা পাওয়া যাচ্ছে। মাঠে বসানো গণশৌচাগারও অপরিচ্ছন্ন।
নব দিগন্ত ক্লাব মাঠে কথা হয় মিনু বেগমের সঙ্গে। পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে এখানে থাকেন মিনু। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুরুতে একটা খাট ছিল। অন্যরা মাটিতে ঘুমাত। কিন্তু পানি ঢুকে যাওয়ায় আর মাটিতে থাকা যাইছে না। তাই আরেকটা খাট এনেছি। ইট বিছিয়ে তার ওপর খাট বসাইছি।’
তুলনামূলক ভালো অবস্থা পূর্ব টাইগারপাস প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থাপিত তাঁবুগুলোর। এখানে কথা হয় রিকশাচালক এমদাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১৮ দিন আগে এখানে এসেছি। আগে বাটালি পাহাড়ে ছিলাম। বৃষ্টিতে গত শনিবার রাতে তাঁবুর একপাশ দিয়ে পানি ঢুকেছিল। এ ছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই।’
উল্লেখ্য, মে মাসে নগরের টাইগারপাস এলাকার নব দিগন্ত ক্লাব মাঠে ৯০টি তাঁবু স্থাপন করে জেলা প্রশাসন। বাটালি পাহাড় ও আশপাশের এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারী পরিবারগুলোকে এখানে অস্থায়ী পুনর্বাসন করা হয়। এরপর সংলগ্ন পূর্ব টাইগারপাস প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আরও ৭০টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়।
নব দিগন্ত ক্লাব মাঠের তাঁবুতে পানি জমার বিষয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এম এ এইচ হুমায়ুন কবির বলেন, শুরুতে দ্রুতগতিতে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়ায় মাঠটি ভালোভাবে প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। তার পরও বৃষ্টি শুরু হলে মাঠে দুই গাড়ি বালু নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাসিন্দারা যদি নিজ উদ্যোগে মাটি দিয়ে তাঁবুর চারপাশ উঁচু করে, তবে আর পানি ঢুকবে না। টাইগারপাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি ভালোভাবে প্রস্তুত করার সময় পাওয়া গেছে। তাই সেখানকার অবস্থা ভালো।
খাওয়ার পানি ও পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন দুই জায়গায় পাঁচ হাজার লিটার পানি সরবরাহ করা হয়। একটু যত্নবান হয়ে খরচ করলে পানির সংকট হওয়ার কথা নয়। পানিতে ময়লা পাওয়ার অভিযোগটি আমরা অনুসন্ধান করে দেখছি।’

No comments

Powered by Blogger.