সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার পরিকল্পনা সৌদির

সিরিয়ার বিদ্রোহীদের বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের পরিকল্পনা করছে সৌদি আরব। জার্মান সাপ্তাহিক পত্রিকা ডের স্পিগেল গতকাল রোববার এ খবর দিয়েছে। বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের মিত্র সৌদি আরবের এ পরিকল্পনার কথা জানা গেল। ডের স্পিগেল জানায়, জার্মানির বৈদেশিক গোয়েন্দা বিভাগ এবং সরকার গত সপ্তাহে একটি গোপন প্রতিবেদন পেয়েছে। ওই প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য দেশটির বিদ্রোহীদের ভূমি থেকে আকাশে বা কাঁধ থেকে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সৌদি আরব। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তুলনামূলকভাবে নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া যুদ্ধবিমান বা হেলিকপ্টার ধ্বংস করা যায়। ১৯৮০-এর দশকে তৎকালীন সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আফগানিস্তানের মুজাহিদদের এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হয়েছিল। আসাদ সরকারকে হটাতে দুই বছরের বেশি সময় ধরে লড়াই করছে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা। তাদের অন্যতম মিত্র সৌদি আরব। দেশটি অনেক দিন ধরেই বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহের পক্ষে কথা বলছে। সৌদি আরবসহ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ বিদ্রোহীদের ছোট পর্যায়ে হালকা অস্ত্র দিয়েছে বলেও খবর আছে। গত বৃহস্পতিবার কিছুটা আকস্মিকভাবে হোয়াইট হাউস ঘোষণা দেয়, আসাদ বাহিনী যে বিরোধীদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে, তার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করবে তার দেশ। যদিও এখন পর্যন্ত বিদ্রোহীদের ছোটখাটো অস্ত্র দেওয়ার কথাই বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষেপণাস্ত্রের মতো কোনো অস্ত্র দেওয়ার পরিকল্পনার কথা তারা এখনো জানায়নি।
এর আগে গত মাসে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর ফলে দেশটিতে অস্ত্র সরবরাহ করতে চায়, এমন পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য আর কোনো বিধিনিষেধ নেই। আজ সোমবার থেকে উত্তর আয়ারল্যান্ডে শুরু হওয়া জি-৮ সম্মেলনে সিরিয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পেতে পারে। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দেওয়ার পর এ বিষয়ে ইউরোপীয় মিত্রদের সমর্থন আদায় করার চেষ্টা করতে পারেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি মন্তব্য করেছেন, সিরিয়া সংকটের রাজনৈতিক সমাধান কঠিন হয়ে পড়েছে। আসাদ সরকার বিরোধীদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। গত শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এ অবস্থায় নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশ জর্ডান। সিরিয়ার বিদ্রোহীরা যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের কাছ থেকে অস্ত্রের জোগান পেলে প্রতিবেশী দেশটির যুদ্ধপরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.