নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি-পশ্চিম তীর থেকে আব্বাসকে উৎখাত করতে পারে হামাস

গাজার নিয়ন্ত্রণকারী দল হামাস যেকোনো সময় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সরকারকে উৎখাত করতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন পাওয়া আব্বাস সরকারের কাছ থেকে পশ্চিম তীরের শাসনক্ষমতা কেড়ে নিতে পারে তারা।
গত মঙ্গলবার জেরুজালেমে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়ায় প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেসের সমালোচনাও করেন তিনি।
ওই অনুষ্ঠানে নেতানিয়াহু বলেন, 'হামাস যে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা কেড়ে নিতে পারে, এ কথা সবাই জানে। ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের শান্তি চুক্তি হওয়ার পর বা চুক্তি হওয়ার আগে যেকোনো সময় এটা ঘটতে পারে। গাজায়ও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।'
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনের সাধারণ নির্বাচনে হামাস জয়ী হয়। কিন্তু মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহ তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়। এর পর সশস্ত্র অভিযানের মাধ্যমে ২০০৭ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয় হামাস। তবে কয়েক বছরের বিরোধিতার পর ২০১১ সালের এপ্রিলে মিসরের মধ্যস্থতায় প্রথমবারের মতো সমঝোতা চুক্তিতে পেঁৗছে হামাস ও ফাতাহ। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আদায়ের প্রস্তাবেও ফাতাহকে সমর্থন দেন হামাস নেতারা।
এদিকে গত রবিবার বিদেশি কূটনৈতিকদের এক অনুষ্ঠানে ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসার আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেস। তিনি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট আব্বাস আলোচনায় বসতে আগ্রহী এবং তাঁর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিতে পেঁৗছা সম্ভব। এ ব্যাপারে হাতে খুব বেশি সময়ও নেই।' সহিংসতা পরিহারে রাজি থাকলে হামাসের সঙ্গে আলোচনায় বসা যায় বলেও মন্তব্য করেন পেরেস। তবে পেরেসের আহ্বানের সমালোচনা করেন নেতানিয়াহু, 'সম্প্রতি আমাকে (শান্তি আলোচনার ব্যাপারে) সামনে এগিয়ে যাওয়ার, ছাড় দেওয়ার এবং চাপ প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হচ্ছে। আমার মনে হয় দায়িত্বশীলতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে কূটনৈতিক প্রক্রিয়াকে চলতে দেওয়া উচিত। এ ব্যাপারে তাড়াহুড়ার কিছু নেই। নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পরই কেবল শান্তি অর্জিত হতে পারে।' প্রসঙ্গত, অধিকৃত এলাকায় ইসরায়েলের বসতি স্থাপন নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে উভয় পক্ষের শান্তি আলোচনা বন্ধ আছে।
এদিকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে গত মঙ্গলবার অন্তত ৩০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা জঙ্গি সংগঠন ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সদস্য সন্দেহে নাবলুসের তামৌন গ্রামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। স্থানীয় জনগণ ওই সময় সেনাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইসরায়েলি বাহিনী রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে। ওই সময় ৩০ ব্যক্তি আহত হয়।
'এক দশকের মধ্যেই ধ্বংস হবে ইসরায়েল' : মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক দল ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির উপপ্রধান এসসাম আল এরিয়ান বলেছেন, আগামী এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে ইসরাইলের অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। আল-শারক আল আওসাত পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের ভাবাদর্শ ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে শেষ হবে।' তিনি বলেন, ইসরায়েলি দখলদাররা ফিলিস্তিনিদের নিজ দেশে ফিরে আসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের উচিত এই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়া এবং ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দেওয়া। সূত্র : এএফপি, টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.