ককটেল ফাটাল দুর্বৃত্তরা সাংবাদিক পেটাল ছাত্রলীগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রলীগের কর্মীদের মারধরে আহত হয়েছেন প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক হাসান রাজা। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা আরও তিন ফটোসাংবাদিক লাঞ্ছিত হন। পরে ছাত্রলীগের কর্মীরা খবর দিলে শাহবাগ থানার পুলিশ দুই ফটোসাংবাদিককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
ছাত্রলীগের হামলা ও পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিবাদে রাতেই শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ফটোসাংবাদিকেরা।
গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পলাশী মোড়ে ফটোসাংবাদিকদের ওপর হামলার এ ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছিত অন্য তিন ফটোসাংবাদিক হলেন রয়টার্সের এন্ড্রু বিরাজ, নিউ এজ পত্রিকার সনি রামানি ও বাংলানিউজ ২৪ ডট কমের হারুন-অর-রশীদ। এর মধ্যে রামানি ও হারুনকে পুলিশ আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সন্ধ্যার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের পাশে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় এ রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন ওই চার ফটোসাংবাদিক। পলাশীর মোড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সলিমুল্লাহ হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘ধর ধর’ বলে তাঁদের ঘিরে ফেলেন। ছাত্রলীগের কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে তাঁদের পরিচয় জানতে চান। ফটোসংবাদিক বলে পরিচয় দেওয়ার পর এবার ছাত্রলীগের কর্মীরা পরিচয়পত্র দেখতে চান। পরিচয়পত্র দেখানোর পর দেহ ও সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করেন তাঁরা। একপর্যায়ে তাঁরা হাসান রাজাকে বেধড়ক মারধর করেন। আহত হয়ে তিনি ঘটনাস্থল থেকে সরে আসেন।
এন্ড্রু বিরাজ প্রথম আলোকে বলেন, পিকেটাররা আজিমপুরে একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছেন এমন খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলের দিকে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। কোনো কারণ ছাড়াই ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁদের গতিরোধ করে লাঞ্ছিত করেন। হাসান রাজাকে মারধর করার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে রামানি ও হারুনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
হাসান রাজা বলেন, পরিচয়পত্র দেখানোর পর অকথ্য ভাষায় তাঁকে গালিগালাজ করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এর প্রতিবাদ করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে মারধর করা শুরু করেন তাঁরা।
ঘটনার পরপরই শাহবাগ থানায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোসাংবাদিকেরা জড়ো হন। তাঁরা ফটোসাংবাদিকদের আটকের প্রতিবাদে এবং জড়িত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগ থানার সামনে এক ঘণ্টা অবস্থান করেন।
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আজ রোববারের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেন।
মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ ছাত্রলীগের কর্মী হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সাধারণ ছাত্র হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে।

No comments

Powered by Blogger.