মস্তিষ্কের শতাধিক রোগের নেপথ্যে

মস্তিষ্কের ১৩০টির বেশি রোগের কারণ হিসেবে কাজ করছে গুচ্ছাকারে থাকা আমিষ। গত রোববার গবেষণার মাধ্যমে এসব আমিষ আবিষ্কারের কথা দাবি করেছেন একদল বিজ্ঞানী। নেচার নিউরোসায়েন্স সাময়িকীতে তাঁদের এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ব্রিটেনের ওয়েলকাম ট্রাস্ট স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের গবেষকদের এই গবেষণাকাজে নেতৃত্ব দেন শেঠ গ্রান্ট।
বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, এই গবেষণা থেকে তাঁরা যে তথ্য পেয়েছেন, এতে আলঝেইমার, পারকিনসন্সসহ মস্তিষ্কের বেশ কিছু সমস্যার সঙ্গে ওই আমিষের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মৃগী রোগ এবং শিশুদের অটিজমের জন্যও এসব আমিষ দায়ী।
মানবমস্তিষ্ক হচ্ছে কোটি কোটি বিশেষায়িত স্নায়ুকোষের কেন্দ্র। এসব কোষ ‘সিনাপস’ নামে কোটি কোটি আন্তপথের মাধ্যমে পরস্পর সংযুক্ত। এসব সিনাপসের ভেতর কিছু আমিষ মিলে একটি আণবিক ক্রিয়া তৈরি করছে, যা পোস্ট-সিনাপটিক ডেসটিনি বা পিএসডি নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই ক্রিয়া সিনাপসের কাজ ব্যাহত করছে, যা থেকে জন্ম নিচ্ছে জটিল রোগ এবং পরিবর্তন ঘটছে ব্যক্তির আচার-আচরণে। বিজ্ঞানীদের দাবি, তাঁরা যেসব পিএসডি পেয়েছেন, এতে এ পর্যন্ত এক হাজার ৪৬১টি আমিষ পাওয়া গেছে। এসব আমিষের প্রতিটি পৃথক জিনের মাধ্যমে সংকেতাবদ্ধ।
শেঠ গ্রান্ট বলেন, ‘আমরা ১৩০টির বেশি মস্তিষ্কের রোগের সন্ধান পেয়েছি, যেসব রোগের সঙ্গে পিএসডির সম্পর্ক রয়েছে।’ বিভিন্ন রোগীর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের সময় এসব পিএসডি আহরণ করা হয় বলে তিনি জানান।
গ্রান্ট দাবি করেন, ‘মস্তিষ্কের রোগের ব্যাপারে আমরা যা পেয়েছি, তা আশাতীত। মস্তিষ্কের রোগে আক্রান্ত কোটি কোটি মানুষের সমস্যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পিএসডি।
গবেষকেরা দাবি করেন, তাঁদের এই নতুন আবিষ্কার মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগ আরও ভালোভাবে শনাক্ত করার বেলায় যেমন কাজে লাগবে, তেমনই এসব রোগ নিরাময়ে সমাধান খুঁজে বের করতেও বেশ কাজ দেবে।

No comments

Powered by Blogger.