বাজল বিশ্বকাপের ঢোল

কারও প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘ক্যাচ দ্য স্পিরিট’, কারোটায় ‘কাপ কিন্তু একটাই’। অনেকেই ওড়ালেন লাল-নীল পতাকা। সামনের বড় ব্যানারটিতে লেখা, ‘ক্যাচ বাংলাদেশ ক্যাচ’। বিশ্বকাপের মাসকট হস্তীশাবক ‘স্টাম্পি’ জীবন্ত হয়ে হেঁটে চলল সবার আগে, পেছনে ঘোড়ার গাড়ির ছোটখাটো বহর। ঢোল-বাদ্যিতে ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানের সুর তুলে পুরো উৎসবে আবহসংগীত বাজিয়ে চলল ব্যান্ড দল।
বিশ্বকাপের উন্মাদনা গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী হবে ‘ক্যাচ বাংলাদেশ ক্যাচ’ রোড শো। বিশ্বকাপের ঠিক দুই মাস আগে বেলুন উড়িয়ে সেটিরই উদ্বোধন হলো কাল বিকেলে। এর আগে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেট থেকে পল্টন ময়দান পর্যন্ত হেঁটে চলল ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত ওই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় পল্টন-প্রেসক্লাব এলাকায় মানুষ যানজটেও নাকাল হলো বেশ। তবে সবাই এতে কেবল বিরক্তই হয়েছেন বলা যাবে না। ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা পথিক কিংবা যানজটে আটকে পড়া বাসের যাত্রী তাহলে কেন মোবাইলের ক্যামেরায় তুলতে চাইবেন বিশ্বকাপ পদযাত্রার ছবি?
শোভাযাত্রা শেষে পল্টন ময়দানে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা হলো রোড শোর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিসিবির সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল রোড শোর উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করলেন, ‘বিশ্বকাপ আয়োজনে দেশের সব মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সারা দেশে ক্রিকেটকে আরও জনপ্রিয় করতে হবে। সে লক্ষ্যেই রোড শোর ব্যবস্থা।’ অনুষ্ঠানে আরও অনেকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল, বিশ্বকাপের স্থানীয় আয়োজক কমিটির (এলওসি) আহ্বায়ক দেওয়ান শফিউল আরেফীনসহ বিসিবি ও ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা।
রোড শোর বাড়তি আকর্ষণ ছিল দর্শকদের অংশগ্রহণে ক্যাচ নেওয়ার প্রতিযোগিতা এবং ব্যান্ড দল লালনের সংগীত পরিবেশন। আজ রোড শোটি ঢাকা থেকে দুটি রুটে রাজশাহী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে রওনা দেবে। এভাবে সেটি বিশ্বকাপের প্রচারণা চালাবে সারা দেশেই।
রোড শোর মধ্যেই আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে একযোগে বিক্রি শুরু হবে বিশ্বকাপের টিকিট। সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করবে মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান মানিগ্রাম। তবে যেখানে সিটি ব্যাংকে মানিগ্রামের কার্যক্রম নেই, সেখানে বিকল্প ব্যবস্থা হবে। কাল এলওসির সভা শেষে বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, আগামী ২৭-২৮ ডিসেম্বর সিটি ব্যাংকের কোন কোন শাখায় টিকিট বিক্রি হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ভেন্যু পরিদর্শন করে যাওয়া আইসিসির প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদন নিয়েও আলোচনা হয়েছে এলওসির সভায়। ভারত ও শ্রীলঙ্কার তুলনায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি নিয়ে নাকি সন্তোষই প্রকাশ করেছে আইসিসির লোকজন। ছোট্ট যে দুটি পরামর্শের কথাও জানা গেল। ফ্লাডলাইট জ্বালানোর জন্য বিকল্প বিদ্যুৎব্যবস্থা রাখা এবং মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একটি সাইট স্ক্রিন আরেকটু পেছনে সরানো।
বিশ্বকাপ রোড শো শুরুর দিনে আইসিসির সন্তোষটাও বোধ হয় একটা সুখবর।

No comments

Powered by Blogger.