গল্প- 'কাজল রানীর হারেম' by পাপড়ি রহমান

উনানের ভেতর চালান করে দেওয়ার জন্য, প্রায়ই আম-জাম বা কাঁঠালের মস্ত কোনো ডাল কেটে ফেলা হতো। যেদিন গাছের ডাল কাটা হতো, সেদিন কাজল রানীদের চারপাশে উৎসবের জোয়ার বয়ে যেত!

দুয়ারে ফেলে রাখা কাঁচা ডালের ওপর সক্কলে চড়ে বসত। আর পাতা ঝাঁকিয়ে দুলতে দুলতে বলত_
জুক্কুর জুক্কুর ময়মনসিংহ
ঢাকা যাইতে কত দিন?
এক মাইস চলি্লশ দিন...
কাজল রানী ইদানিং খুব করে ভাবে ময়মনসিংহ শহরটা বুঝি খুব কাছে ছিল? জুক্কুর জুক্কুর করলেই বুঝি সেখানে পেঁৗছে যাওয়া যেত? আর ঢাকা শহর ছিল দূর, বহুদূর। ঢাকা শহরের চাইতে কলকাত্তা শহর তখন ছিল কত্ত দূর? এখন কলকাতা শহর কতদূর?
এই 'কত্তদূর' শব্দটা যেন তীরের মতো ধাই করে বিঁধে পড়ে কাজল রানীর কলিজার ভেতর! কলিজাকে এক্কেবারে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়ে ক্রমশ তা নিচের দিকে নামতে থাকে। নামতে নামতে অন্ত্রের নাড়িভুঁড়িতে প্যাঁচ লাগিয়ে দিলে কাজল রানীর পেট ঠেলে কান্না উথলে আসে! কাজল রানী যেন দিব্যি জানে কান্নার উৎপত্তি পেট থেকে। পেট থেকেই। নইলে চক্ষে জল আসার আগে পেটের মধ্যেই এত উথাল-পাথাল করে কেন?
পেট যেন গতরের যত জমানো জল ঠেলেঠুলে পাঠিয়ে দেয় চক্ষের দিকে। তারপর চক্ষু তা ঝরঝর করে ঝরিয়ে দেয়।
কত্তদূর কলকাত্তা শহর?
কাজল রানী আনপড় মানু। দূরত্বটুরত্বের হিসাব সে কি আর জানে? জানে না। কাজল রানী তেমন কিছুই জানে না। সে শুধু জানে এই যে বাংলাদেশ! মারকাট করে, রক্তারক্তি করে স্বাধীন করা বাংলাদেশ_এই স্বাধীন দেশে তাকে পরাধীন করে দিয়ে চলে গেছে সবাই। শুধু পরাধীন নয়, ঠেলে ফেলে দিয়ে চলে গেছে তার বাপ। তার মা। তার ভাইবোন। কাজল রানীর যত আত্মীয়স্বজন। কী হয়েছিল কাজল রানীর ছোট বোনের। সে আজ পর্যন্ত জানতে পারেনি। বাড়িতেই তো ছিল। মা-বাবা বোবা হয়ে ছিল দুদিন। তারপর এক রাতে সবাই অরূপ শাহাদের সঙ্গে চলে গেল। তাকে শুধু বলে গেল ভালো থাইকো মা...।
শুধু কাজল রানীর যাওয়া হয় নাই। আসলে সে যেতে পারে নাই। রমেশ নামক লোকটার সঙ্গে তার জীবন চিরতরে বাঁধা পড়েছে। সাতপাকে বাঁধা পড়েছে। কাজল রানীর পেট ঠেলে ওঠা কান্না কে দেখে? কেউ না? কলকাত্তা কতদূর মনে হতেই কেন মনে হয় মরুভূমিতে আটকে পড়া তার জেবন! নিজের রক্তের কাকপক্ষীর দেখাও সে পায় না! এই স্বাধীন দেশে একা একা পড়ে থাকার মানে কী?
তখন ১৬ বছর বয়স কাজল রানীর। মালাবদল কী? সাতপাক কী কোনোটাই তো সে অত ভালো বোঝে না। অথচ রমেশের সঙ্গে তার জীবন জুুড়ে গেল। শুধু কি জীবন জুড়ে যাওয়া? মিলন পর্যন্ত হয়ে গেল। রমেশ তখন কাঠের রং-রূপ পাল্টায়। শবদেহের মতো তক্তাগুলোতে মাপজোখ করে, বাটাল মারে। রানদা করে। তারপর তাতে স্ক্রু এঁটে দেয়। অথবা পেরেক!
শিরিষ কাগজ ঘষে মসৃণ হলে বার্নিশের প্রলেপ দেয়। তারপর ওটা যে একদিন শবদেহ ছিল বা খালি কাঠের তক্তা ছিল তা আর ভাবা যায় না! কাজল রানী প্রথম দিকে ভিরমি খেত_
'ভগবান! ভগবান! এইডা কিমুন ভেলকি লাগনের কাণ্ড! কাষ্ঠলের টুকরা, টুকরা না যেন মরা কিছু! মরার মতো তো পইড়াও থাকে। নড়া নাই! চড়া নাই! বলা-কওয়াও নাই!
শবদেহ কাঠ_তাতে কি না মানুডা ভেলকি মাইরা দেয়! মরার গতর দিয়া তহন রোশনাই বাইর অয়। খাট কি পালংক কি চিয়ার কি চেননের উপায় নাই। মরারে যে এমুন কইরা জ্যাতা করে হেয় কি মানু না দেওদানো?'
রমেশের হাতের কাজ দেখে টাসকি লাগা কাজল রানীর তখন বেহাল দশা। দিনমান হাতুড় মারা, বাটাল মারা, রানদা করা মানুডার সামান্য ক্লান্তির বালাই নাই। আন্ধার নামল কী, ঝিঁঝিঁ পোকার গলায় একটু জোর ডাক উঠলেই সে পড়ত কাজল রানীকে নিয়ে।
কাজল রানী তখন রমেশচন্দ্রের পাটরানী! রমেশচন্দ্র এই পাটরানীকে একেবারে তছনছ করে দিত। রমেশচন্দ্রের হাতের চাপে কত জোড়া পলা আর বালা যে তার ভেঙেছে! আর পলা ভাঙলেই কাজল রানী আতঙ্কিত! অমঙ্গল কি ঘরের দুয়ারে দাঁড়াল?
'কিমুন এতাল-বেতাল মইষের মতো করে যে মানুডা? মইষ তো না সাক্ষাৎ বাঘ। যার হাতের থাবায় পলা টুকরা হইয়া যায়?'
কাজল রানীর এই মইষ-বাঘের মাঝে ঘোরার সময় কোথায় রমেশের? সে তখন ঘুমঘোরে মরে আছে। আর ভুশভুশ করে নিঃশ্বাসের শব্দ তুলছে।
এভাবেই সময়। কাজল রানীর রাইত। দিন। ফের রাইত। ফের দিন। মাস। বৎসর!
বছর পড়তি হলে রমেশ চন্দ্রের মতি বদল হয়। কাজবিমুখ হয়। আরামে নিদ্রা যেতে চায়! মরা কাঠ জ্যান্ত করায় তার যেন আর আগ্রহ নাই। ঘরে বসে থাকে রমেশ। ঘরের চিলতা বারান্দায় আলসে হয়ে বিড়ি ধরায়। ধোঁয়া ছাড়ে। লজ্জা আর শরমে কুঁকড়ে থাকা কাজল রানী প্রথম প্রথম কিছু বলে নাই! আসলে বলতে পারে নাই। কিন্তু সময় কি ঠেক দিয়ে রাখা যায়? সংসারে মানু বাড়ে। নয়া নয়া মানু। কাজল রানীর নিজ গর্ভের মানু। তারা হামাগুড়ি দেয়। আধো আধো কথা বলে। হাঁটতে শেখে।
রমেশের হাতুড়-বাটালের রোজগারে কি হয় তখন? কতটুকু হয়?
শালিকচূড়া গ্রামে কাজল রানীর হাতের কাজের ছিল ভিন্ন কদর। কাজল রানীর খাড়ি আর বেতের কাজ! কাজল রানীর দুই হাত ফের কাজ জুড়ে দেয়। খাড়ি। ঝুড়ি। মোড়া। পাড়া-পড়শির চক্ষু কপালে ওঠে_
'এ্যাঁ ছ্যাঁ রমেশ বইয়া খায় আর বউডায় দেহি কাম করে!'
কাজল রানীর গতরে লজ্জার ঘাম নামে। কিন্তু লজ্জার ঘামে সংসারের অনটন ঠেকানো যায় না! ফলে কাজ চলে। সময় ঘুরে। হাত চলে। সংসারও চলে।
কাজল রানীর হিসাব পাক্কা! ট্যাকায়ই তো ট্যাকা আনতে পারে!
কাজল রানীর হারেম
সুরেশের জন্মের পর যোগেশ। যোগেশের পর পারুল। তারপর চম্পা। চারজন ছাওয়াল নিয়ে কাজল রানীর বেহাল দশা! চম্পা আর পারুলকে সে ইশকুলে পাঠায়। সুরেশ আর যোগেশকেও। আর সে খাটে দিন-রাইত। রাইত আর দিন। বেশি কষ্ট হলে রমেশকে গালমন্দ করে_
'হাতে কি হাপাবাতাস লাগল নাহি? হাত য্যান আর তার চলে না। হাতের লগে পাও দুইটারেও পেটে হান্দাইয়া বইস্যা থাকো। হেরপর কুমড়ার লাহান গড়াইয়া গড়াইয়া চলতে থাকো। গড়াইয়া এক্করে সুমুদ্দুরে গিয়া পড়ো। সুমুদ্দুর এই লুলা আর অধমরে ভাসাইয়া নিক। অকম্মা মানুর দরকার কি এই জগৎ সংসারে?'
রমেশ উত্তর করে না। হয়তো ইচ্ছা করেই করে না। কাজল রানীর অন্দরমহল নিয়ে সে মাথা ঘামাতে আসে না। মাথা ঘামালেই বিপদ ঠ্যালা দেবে। তখন হয়তো কাজল রানীর মাথাটাই বিগড়াতে শুরু করবে। রমেশ এসব রয়ে-সয়েই থাকতে চায়। আর কাজল রানী নিজেই তো রোজগার করে। রোজগারের টাকাও অন্দরমহলেই খরচা করে। রমেশের কাছে টাকা চাওয়ার সাহস তার নাই। সাহস হয় নাই কোনো দিনই। রমেশ তাই রয়ে থাকে। সয়ে থাকে। বউ যে টাকা চায় না!
সুরেশ, যোগেশ, চম্পা, পারুল যেন ফনফনিয়ে বেড়ে উঠল। কাজল রানী ওদের দিকে ট্যারা চক্ষে তাকায়। মায়ের নজর বড় খারাপ। লেগে যেতে পারে। বরং রমেশ গড়িয়ে গড়িয়ে সমুদ্দুরে না পড়লেও কাজল রানী ভাবনা তাতে পড়ে।
'চম্পা আর পারুলরে নেকাপড়া করানই নাগে। নেকাপড়া ছাড়া বুদ্ধি খুলব কেমনে?'
সুরেশ আর যোগেশের দিকে তাকালে অন্য ভাবনা_
'পুলাগো নাইগ্যা নেকাপড়া মাইয়া আনা যাইব না। নেকাপড়া জানলে ভজঘট হইব। আমার কথা শুনব না। আমারে মানব না। অশান্তি হইব চরম। বউরা যুদি আমারে চালায় তাহলে বিপদ।'
কোনো কোনো রাতে কাজল রানীর হাতের পলা ফের ভাঙার পর রমেশকে এ কথা সে বলেছে। নিজের গোপন ইচ্ছার কথা। শুনে রমেশ মিটিমিটি হেসেছে। তারপর বলেছে_
'আইচ্ছা। অহন থাউক। হেরা বাড়ন্ত হউক। কামাই রুজি করুক।'
কাজল রানী ফোঁস করতে চেয়েও থেমে গেছে। এক ঘরে, এক চালের তলায় থাকলে কাইজ্যা-ফ্যাসাদে লাভ কী?
চম্পার বাড়ন্ত শরীর। দেখতে ডাগর-ডোগর হয়েছে। মাঝেমধ্যে কাজল রানীকে বলত স্কুলে যাবে না সে। কাজল রানী প্রশ্ন করলে মাথা নিচু করে সে বলত, স্কুলে যেইতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগে, আসার পথে কয়েকটি ছেলে তাকে আজেবাজে কথা বলে। কাজল রানী উত্তর খোঁজার চেষ্টা করলে চম্পা জানায়, ক্লাসে ৩৯ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে সে তৃতীয়। তাই শিক্ষকরা তাকে পছন্দ করে। পারুল কিংবা সুরেশ সঙ্গে না থাকলে তাকে তিন-চারটা বখাটে ছোঁড়া একসঙ্গে পিছু নিয়ে নানা ধরনের কুপ্রস্তাব দেয়। তাই সে অনেক দিন স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিলে বাবা রমেশ কয়েক দিন পেঁৗছে দেয়। অনেক দিন পর ঘটে দুর্ঘটনাটা। দশম শ্রেণীর পরীক্ষা দিয়ে হঠাৎ একদিন তার আর বাড়ি ফেরা হয় না। রাত্র গড়ায়। হিমধারা বয় কাজল রানীর ঘরে। সবাই যেন বোবা। কারো মুখে কথা নেই। বাড়ির আশপাশের কেউ কেউ লক্ষ করেছে। তিন দিন পর প্রতাপ জমিদারের পোড়া ভিটা থেকে আবিষ্কৃত হয় চম্পার বিকৃত লাশ। থানা-পুলিশ করেনি। রমেশ এ ঘটনার পর বাড়ি থেকে বের হয়েছে এমনটি দেখা যায়নি। একদম ঘরের মধ্যেই সেঁটে আছে যেন তার বাঁকানো খুঁটি।
শুভ লগন
পারুলের বিয়ে হয়ে গেল চম্পার এই ঘটনার মাস দুই পর। দুজনই ইশকুল পার করেছিল। দেখতেও মন্দ না। পণ ছাড়াই মেয়ে পার হয়ে গেল। সুরেশকে বিয়ে করানো দরকার। যোগেশও বেশ তাগড়া জোয়ান। বিয়ের উপযুক্ত। সুরেশের বিয়ের কথা টুং-টাং বাজতেই সে বলেছে_
'নয়নারে তুমার কিমুন লাগে মা?'
'নয়না? নয়না কেডায়?'
'বায়ৈখোলার হরেন কাকুর মাইয়া।'
'অ!'
'তুমি কি বেজার হইছ মা?'
'মাইয়া কিমুন? নেকাপড়া জানে?'
'হ। তা তো জানবই।'
'তাহলে তো ভজঘট। আইস্যাই লাঠি ঘুরাইতে থাকব।'
'তোমার মাইয়াটা ঘুরাইতেছে নাকি?'
'পারুল! মাটির মাইয়া।'
'নয়নাও মাটিরই হইব মা।'
পাঞ্জি দেখে নয়নার সঙ্গেই সুরেশের বিয়ের লগ্ন পাকা হয়ে গেল।
কাজল রানী নানা হিসাবপাতি করে। সে তো বরাবরই পাক্কা হিসাবি।
রমেশের কোনো দাবি-দাওয়া ছিল না। সে শুধু কাজল রানীকেই চেয়েছিল।
তখনকার দিন আর এখনকার দিন? রমেশ কি সুরেশের মতো নেকাপড়া জানা ছিল?
সুরেশের কামাই ভালো। মনডাও ভালো।
ট্যাকায়ই ট্যাকা আনে।
'সুরেশের বিয়ার সমুয় নয়নারা যুদি ঘরদোর সাজায়া-গুছায়া দেয় মানা করনের কী আছে? হেরা যে বেভার দিব তাতে নিজের মাইয়ারেই দিব। হেই বেভার কি আমি ভোগ করমু? না দুইজনেই ভোগ করব?'
রমেশকে এ নিয়ে মোটামুটি ধমকি দিয়েছে_
'বেভার দিবার চায়। মানা করবা না কিন্তুক।'
রমেশ আমতা আমতা করে বলেছে_
'কিমুন দেহায়? গেরামের বেবাকে কি কইব? আমি তো বেভার নেয় নাই।'
'মাইনষে তো ম্যালাই কয়। আর তুমি তো আছিলা আনপড় মানু।'
কাজল রানীর হারেমে রমেশের মত অচল।
বিয়ের ক্ষণ যত ঘনিয়ে আসছে কাজল রানী চক্ষু দুইটা খুশিতে চকচক করে_
হাড়ি-ঘড়া-বটি-দা-বালতি-লেপ-তোশক চাইকি রমেশের মসৃণ পালিশের মতো একটা পালংকও আসতে পারে। সুরেশের সংসারটা ভরভরন্ত দেখাবে। তৈজসপত্র, বেভার আর সুখে ঠাসা!
ভাটির হাওয়া
বেভারের কথা নয়নার কানেও পেঁৗছছে। সে কলেজ পাস দিয়েছে। বাবা হরেন্দ্র তাকে কষ্ট করে পড়ালেখা শিখিয়েছে। এখন বিয়ের সময় পণ দিতে গেলে সে একেবারে পথে নেমে যাবে। ভিটেবাড়ি বন্ধক বা বিক্রি করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
নয়না ফাঁপরে পড়ে। কী করবে সে এখন? কিছু বলা যাচ্ছে না। সুরেশ কোনো কিছু চায় নাই।
একদিন ভোরে নয়না শালিকচূড়ার উদ্দেশে হাঁটা দেয়। সোজা সুরেশের বাড়ি।
কাজল রানী তাকে কখনো দেখে নাই। প্রথম দেখাতে চমকে ওঠে।
'বেজায় তো সাহস মাইয়াডার। লগন না আইতেই ঘরে আইস্যা খাড়াইছে! কিন্তুক তার মুখের দিকে চাইলে পরানডা জুড়ায়া যায়। মায়াকাড়া চক্ষু। কেন আইছে? কি চায় মাইয়াডা?'
'মা আমি কিছু বলতে আসছি আপনেরে। আপনের অনেক কথা শুনছি। খাটাখাটনির কথাও শুনছি। আপনেই সবাইরে লেখাপড়া শিখাইছেন।'
কাজল রানী রা করে না। নয়নার কথা শোনে কেবল।
'মা আমরা দুইজন কি আপনের মতো কষ্ট করতে পারব না? আপনে চাইলে বাবা সবই দিব। কিন্তু তাতে হেয় ভিটা বন্ধক দিব। নইলে বেইচা দিব। চাইলে সে কাউরে মানা করব না।'
কাজল রানী, নয়নার দিকে ভালো করে তাকায়। শাপলার ডাঁটার মতো কোমল দুইখানা হাত! এই হাতে শাখা-পলা ভারি মানাবে। ঘন চুলের মাঝ বরাবর সাদা সিঁথির পথ। সিন্দুর লেপে দিলে নজর লেগে যাবে!
নয়না চুপ করে আছে অনেকক্ষণ। কাজল রানীও। কেউ কোনো কথা বলছে না। নয়না এখন কি করবে?
বায়ৈখোলায় ফিরে যাবে খালি হাতে? বাবার ঘাড়ে পণের বোঝা চাপিয়ে! কাজল রানী হঠাৎ বলে ওঠে 'জলখাবারডা খাও। আমি আসতেছি।'
নয়না এবার ভয় পায়। দ্বিধাগ্রস্ত হয়। সুরেশের সঙ্গে তার বিয়েটা হয়তো ভেঙে যাচ্ছে। নয়নার চক্ষু জলে ভরে ওঠে। কত স্মৃতি, প্রেম, ভালোবাসা তার সুরেশের সঙ্গে! এতসব কোথায় রেখে কার সঙ্গে নতুন করে সংসার পাতবে সে?
কাজল রানী ভাবনার জগতে নয়নার স্থলে চম্পাকে দেখতে পায়। ছোট বোনের স্মৃতি মনে নেই। নয়না নাকি তার মেয়ে চম্পা। ভাবনা আগায় না।
নয়না হঠাৎ পুরুষ কণ্ঠ শুনতে পায়_
'এখনই? কাজল মাথাডায় কি তুমার গণ্ডগোল?'
'হ। এখনই। ঠাকুররে ডাইক্যা আনো জলদি। পাঞ্জি দেখনেরও কাম নাই। খালি লগনডা শুভ হইলেই চলব। সুরেশরে খবর পাঠাও। মাইয়াডারে আজ আর ফিরতে দিমু না...এমুন রোদ মাথায় ফেইল্যা আইছে!
=============================
রাজনৈতিক আলোচনা- 'এক-এগারোর প্রেতাত্মা চারপাশেই ঘুরছে by আবেদ খান  খবর- মহাজোট আছে মহাজোট নেই!' by পার্থ প্রতীম ভট্টাচায্য  আলোচনা- 'বাঙ্গালির বদলে যাওয়া' by সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম  খবর- আফগানিস্তান শান্তি কত দূর?' by তৌহিদ আজিজ  গল্প- 'ঝল্সে ওঠে জরিণ ফিতা' by রফিকুর রশীদ  ফিচার- ‘আক্রান্ত' by জাফর তালুকদার  স্মরণ- 'একজন বিস্মৃতপ্রায় বুদ্ধিজীবী' by আহমাদ মাযহার  গল্প- 'অলৌকিক উপাখ্যান' by হাসান মোস্তাফিজুর রহমান  গল্প- 'জয়মন্টপের জায়াজননী' by জামাল উদ্দীন  আলোচনা- 'তুর্গিয়েনেফ প্রসাদাৎ' by হায়াৎ মামুদ  গল্প- 'একটাই জীবন' by হাজেরা নজরুল  ফিচার- 'এটি একটি সংখ্যামাত্র' by রণজিৎ বিশ্বাস  গল্প- 'সোনালি চিল' by সৈয়দ মোফাজ্জেল হোসেন  গল্প- 'বোবা ইশারা' by মণীশ রায়  গল্প- 'চিরদিনের' by মঈনুল আহসান সাবের  স্মরণ- 'আবদুল মান্নান সৈয়দ সাহিত্যের এক সর্বসত্তা  আলোচনা- 'বাংলা চর্চা পরিচর্যা ও ইংরেজি শেখা'  আলোচনা- 'আমার ছেলেবেলার ঈদ আর বুড়োবেলার ঈদ'  আলোচনা- 'নৈতিক চেতনা : ধর্ম ও মতাদর্শ' by আবুল কাসেম ফজলুল হক খবর- গণতান্ত্রিক সব শক্তির সঙ্গে কাজ করতে চাই: সু চি


কালের কণ্ঠ এর সৌজন্য
লেখকঃ পাপড়ি রহমান


এই খবর'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.