যৌথ সামরিক মহড়ার ‘পাল্টা জবাব’ দেবে উত্তর কোরিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ার পাল্টা জবাব দেবে উত্তর কোরিয়া। গতকাল শুক্রবার ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের (এআরএফ) বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিদলের মুখপাত্র রি তং ইল একথা বলে সতর্ক করে দেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া কাল রোববার থেকে যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করছে। ওয়াশিংটন ও সিউল জানায়, উত্তর কোরিয়ার হামলা ঠেকাতে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন, অন্য ২০টি রণতরী ও ডুবোজাহাজ, ১০০টি বিমান ও আট হাজার সেনা এ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।
রি তং ইল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এটি ঊনবিংশ শতাব্দী নয়। এশিয়ার দেশগুলো এখন শান্তি চায়, উন্নয়ন চায়। উত্তর কোরিয়াও সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।
রি তং ইল বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ মহড়া কোনো প্রতিরক্ষা মহড়া নয়। তিনি আশঙ্কা করেন, এই মহড়ায় দেশ দুটি অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করবে, যা শুধু উত্তর কোরিয়ার জন্য নয়, এশিয়ার এই অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য বড় ধরনের হুমকি। তাই উত্তর কোরিয়ার অবস্থান স্পষ্ট তা হলো, মার্কিন বাহিনীর পক্ষ থেকে যেকোনো ধরনের হুমকি এলে উত্তর কোরিয়া এর কঠোর জবাব দেবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ মহড়ার পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে চীন। তাদের মতে, এই যৌথ মহড়া এ অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়াবে। দেশটি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায়। এদিকে যৌথ মহড়া পর্যবেক্ষণ করতে জাপান চার সদস্যের প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে। এই দলটি জাপান সাগরে অবস্থানরত মার্কিন রণতরী ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটনে থেকে মহড়া পর্যবেক্ষণ করবে। জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন গতকাল অভিযোগ করেন, উত্তর কোরিয়া উসকানিমূলক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া তার আচরণ থেকে সরে এলে ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। এর আগে গত বুধবার তিনি উত্তর কোরিয়াকে অস্ত্র কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে তাদের ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপ করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া চায়, এআরএফের বৈঠক থেকে দেশগুলো চেওনান ডুবির ঘটনায় উত্তর কোরিয়াকে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেবে।
গত ২৬ মার্চ পীত সাগরে দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধজাহাজ চেওনান ডুবে যায়। এতে ৪৬ জন নাবিকের মৃত্যু হয়। ২০ মে পাঁচ জাতির সমন্বয়ে গঠিত একটি তদন্ত দলের প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার টর্পেডোর আঘাতে ওই যুদ্ধজাহাজ ডুবে যায়। উত্তর কোরিয়া অবশ্য বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

No comments

Powered by Blogger.