তাঁর চেনা প্রতিপক্ষ

ধীরে ধীরে ব্রাজিল অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে, আর আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন কার্লোস দুঙ্গা। চিলির বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ের পর ব্রাজিল কোচের ঘোষণা, ‘কিছু কিছু লোকের সন্দেহ ছিল আমরা বোধহয় পারফর্ম করতে পারব না। কিন্তু যতই সময় গড়াচ্ছে, আমরা উন্নতি করছি, আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছি। আশা করি, এখন আমরা ফাইনাল খেলতে পারব।’
এমন নয় যে বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের জন্যই এখন ফেবারিট ব্রাজিল। ফেবারিট ছিল তারা বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই। তবে কাগজে-কলমের ফেবারিট-তত্ত্বে খুব একটা বিশ্বাস নেই দুঙ্গার, ‘আমরা জানতাম ব্রাজিলের কাছে সব সময়ই প্রত্যাশা থাকে শিরোপা জয়ের। কিন্তু ফেবারিটের তকমা লেগে থাকা মানেই শিরোপা জেতা নয়, শিরোপা জিততে হলে মাঠের পারফরম্যান্স দিয়েই জিততে হবে।’ দুঙ্গাকে সন্তুষ্ট করেছে তাঁর দলের মাঠের পারফরম্যান্সই। উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে অনুজ্জ্বল শুরুর পর আইভরিকোস্টের বিপক্ষে ব্রাজিলের পারফরম্যান্সে ছিল উন্নতির ছাপ। গ্রুপের শেষ ম্যাচে পর্তুগালের বিপক্ষে আবার হতাশাজনক পারফরম্যান্স। দুঙ্গার দল সেরাটা দেখাল পরশু চিলির বিপক্ষে।
মার্সেলো বিয়েলসার চিলিও আক্রমণাত্মক খেলেছে। তবে ব্রাজিল সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে সুযোগ কাজে লাগাতে পারায়। দুঙ্গাও মনে করেন, দুই দলের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে এটাই, ‘ম্যাচটি দারুণ হয়েছে চিলির কারণে। ওরা চমৎকার খেলেছে, ওদের বিপক্ষে ডিফেন্স সামলানো খুব কঠিন। তবে আমরা ভারসাম্য রেখে খেলেছি, সুযোগ কাজে লাগিয়েছি।’
গ্রুপ পর্বে নিজেদের মতো খেলতে না পারা ব্রাজিল সেরাটা দেখাল নকআউট পর্বের মতো চাপের ম্যাচে। দুঙ্গার মতে, এর কারণ এই দলটার সামর্থ্য ও সুদৃঢ় বন্ধন, ‘আমার ছেলেদের সামর্থ্য কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছে। এই দলটা গড়ে উঠেছে গত সাড়ে তিন বছরে। মাঝে মাঝে তাই শুধু একটুখানি দৃষ্টি বা ছোট্ট কোনো কথাতেই তারা বুঝে ফেলে কী করতে হবে। সাড়ে তিন বছরের বন্ধনের প্রতিফলন ছিল এই ম্যাচে। চাপ তাই পাত্তা পায়নি।’
অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যক্তি হতে শেষ আটে দুঙ্গার বাধা পুরোনো শত্রু হল্যান্ড। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে দুঙ্গার নেতৃত্বে শিরোপা জয়ের পথে ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনালে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল ডাচদের, পরের বিশ্বকাপে সেই দুঙ্গার নেতৃত্ব্বেই রানার্সআপ হওয়ার পথে ব্রাজিল সেমিফাইনালে হল্যান্ডকে হারিয়েছিল টাইব্রেকারে। দুঙ্গার ধারণা, এবারও হল্যান্ড বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে, ‘হল্যান্ড সব সময়ই কঠিন প্রতিপক্ষ, দারুণ সব ফুটবলার ওদের সব সময়ই থাকে। দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলোর মতো ওদের টেকনিক্যাল সামর্থ্যও দারুণ।’
অধিনায়ক দুঙ্গা দুবার পেরেছেন এই বাধা টপকাতে, এবার কোচ দুঙ্গার পালা।

No comments

Powered by Blogger.