‘চারে’র আশায় স্নাইডার

‘যখন কারও সুসময় যায়, তখন সব বলই তার কাছে আসে, কীভাবে কীভাবে গোলও হয়ে যায়’—নিজের দুঃসময় আর ডেভিড ভিয়ার সুসময় নিয়ে কদিন আগে বলেছিলেন ফার্নান্দো তোরেস। উরুগুয়ের বিপক্ষে ওয়েসলি স্নাইডারের গোলটি যেন মনে করিয়ে দিল তোরেসের কথাটিই। বক্সের ডান দিক থেকে শর্ট নিয়েছিলেন, খুব বেশি জোরও ছিল না। কিন্তু উরুগুয়ে ডিফেন্ডার ম্যাক্সিমিলানো পেরেইরার পায়ে লাগায় বোকা বনে গেলেন গোলকিপার, বল জড়াল জালে।
এই বিশ্বকাপে এটি স্নাইডারের পঞ্চম গোল। কালকের সেমিফাইনালের আগ পর্যন্ত গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে ডেভিড ভিয়ার সঙ্গে শীর্ষে ছিলেন তিনি। পরশুর গোলটায় যে ভাগ্যের একটু অবদান আছে এটা মানছেন স্নাইডারও, ‘একটু ভাগ্যের ছোঁয়া তো আছেই। আমি স্রেফ শটটা নিয়েছিলাম, এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল জালে গেল।’
তবে গোলটা যেভাবেই হোক, ম্যাচে যে তিনি অসাধারণ খেলেছেন, তার প্রমাণ আবারও ম্যাচ-সেরার পুরস্কার। গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কী হবে সেটা সময়ই বলবে, তবে ম্যাচ-সেরায় তিনি এখন সবার ওপরে। পরশু চতুর্থবারের মতো সেরা হলেন, পেছনে ফেলে দিলেন তিনবার করে সেরা হওয়া কেইসুকে হোন্ডা, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও ডিয়েগো ফোরলানকে। চারবার ম্যাচ-সেরা হয়েছেন, এবার স্নাইডারের সামনে হাতছানি আরও বড় একটি ‘চার’-এর।
ক্লাব দল ইন্টার মিলানের হয়ে এবার সিরি ‘আ’, লিগ কাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘ট্রেবল’ জিতেছেন স্নাইডার। বিশ্বকাপ জিতলে পেয়ে যাবেন ‘কোয়াড্রপল’, চার নম্বর শিরোপা। স্নাইডারের কাছে অবশ্য বিশ্বকাপের কাছে পাত্তা পাচ্ছে না অন্য কিছু, ‘ক্লাব পর্যায়ে আমি এবার প্রচুর সাফল্য পেয়েছি। যেকোনো ফাইনাল খেলাই দারুণ রোমাঞ্চকর। ক্লাব পর্যায়ে সবচেয়ে বড় ম্যাচ চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল। ইন্টারের হয়ে আমার সেই অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যেই হয়েছে। কিন্তু বিশ্বকাপের ফাইনাল মানে অন্য কিছু, আর সবকিছুর ঊর্ধ্বে। আমি সবাইকে বলেছি এটা অসাধারণ একটা অর্জন, সবার এটা উপভোগ করা উচিত। ফাইনালের এখনো কয়েকটা দিন বাকি আছে। এই অর্জনটা আমরা আগে প্রাণভরে উপভোগ করব, এরপর ফাইনালের দিকে মনোযোগ দেব।’
গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে তো আছেনই, গোল্ডেন বলেরও জোরালো দাবিদার। শিরোপার পাশাপাশি ব্যক্তিগত লক্ষ্যগুলোও নিশ্চয়ই পূরণ করতে চাইবেন স্নাইডার? ‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিরোপা জয়। আমরা খুব কাছে চলে এসেছি। বিশ্বকাপের চেয়ে বড় কিছু নেই’—স্নাইডার জানিয়ে দিলেন তিনি আপাদমস্তক ‘টিমম্যান’।

No comments

Powered by Blogger.