সোবার্সের সেরা গাভাস্কার

পুরো ক্রিকেট বিশ্ব তাঁর প্রশংসায় মুখর। কিন্তু শচীন টেন্ডুলকার নন, স্যার গ্যারি সোবার্স তাঁর দেখা সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে বেছে নিলেন আরেক লিটল মাস্টার সুনীল গাভাস্কারকে। রেকর্ড-পরিসংখ্যান সবই টেন্ডুলকারের পক্ষেই কথা বলবে। কিন্তু বোকা পরিসংখ্যান নয়, ক্যারিবীয় এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার মাপকাঠি হিসেবে বেছে নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্ধর্ষ বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে গাভাস্কারের সাফল্য।
‘ভিভিয়ান (ভিভ রিচার্ডস), ব্রায়ান (লারা) কিংবা শচীনের কৃতিত্ব আমি খাটো করছি না। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হলো, এখন পর্যন্ত সুনীল গাভাস্কারই আমার দেখা সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান। মাইকেল হোল্ডিং, অ্যান্ডি রবার্টস, কলিন ক্রফট, জোয়েল গার্নারের মতো দুর্দান্ত ফাস্ট বোলারের বিপক্ষে ও ইনিংস শুরু করত। ভারতের বাইরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডেই ও বেশি রান করেছে’—বলেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার।
পরিসংখ্যানও কিন্তু সোবার্সকে সমর্থন করছে। গাভাস্কারের অভিষেকই হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ওই অভিষেক সফরেই ১৫৪.৮০ গড়ে ৪টি সেঞ্চুরি আর ৩ ফিফটিসহ ৭৭৪ রান তুলে নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছিলেন গাভাস্কার। তাঁকে নিয়ে বাঁধা হয়েছিল ক্যালিপসো সুর। টেস্টে তাঁর ৩৪ সেঞ্চুরির ১৩টিই পরাক্রান্ত ওই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
সোবার্স অবশ্য এও জানালেন, ভিন্ন দুই সময়ের ক্রিকেটারদের মধ্যে আসলে তুলনা চলে না, ‘অতীত আর বর্তমানের খেলোয়াড়দের তুলনা করা হয়। কিন্তু ব্র্যাডম্যান আর কম্পটনরা যে কন্ডিশনে খেলেছেন, এখন তো সেটা আর নেই। ফিল্ডিং ইচ্ছেমতো সাজানো যেত, এখনকার মতো আইনকানুন ছিল না। তখন সারা দিনে ৭০-৭২ ওভারও খেলা হতো, যেসব কারণে তখন ব্যাটসম্যানদের এত রান করার সুযোগ ছিল না। হেলমেট ছিল না, আর্ম গার্ড ছিল না। উইকেট থাকত খোলা।’
সোবার্সের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই গাভাস্কারের অভিষেক। ওই সিরিজে ২২ বছর বয়সী গাভাস্কারের কীর্তির কথা তো আগেই জেনেছেন। ভারতও সেবার প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট জিতেছিল। জিতেছিল সিরিজও!
ভারতের বর্তমান খেলোয়াড়দের মধ্যে সোবার্সের পছন্দের তালিকায় আছেন বীরেন্দর শেবাগ। টেস্টে ৮০৩২ রান আর ২৩৫ উইকেটের মালিকের শেবাগকে বেশি পছন্দ তাঁর খেলার ধরনের কারণে। সোবার্সের কাছে ক্রিকেটের অর্থ বিনোদন, সে কারণে অনেকবারই বলেছেন, ‘খেলাটা যেভাবে খেলা উচিত, শেবাগ সেভাবেই খেলে।’
টেস্ট ক্রিকেটই আসল ক্রিকেট—শাশ্বত বাণীটা মনে করিয়ে দিয়ে সোবার্স জানালেন, অভিজাত খেলাটা যেন টি-টোয়েন্টির বাজারি চাহিদার কাছে মার না খেয়ে যায়, ‘বিনোদনের জন্য টি-টোয়েন্টি ভালো। লোকে তা-ই চাইবে। কিন্তু এই ক্রিকেট টেস্ট ক্রিকেটার জন্ম দেবে না।

No comments

Powered by Blogger.