১৩২৫ কোটি টাকার লেনদেন -ঢাকার শেয়ারবাজারে আবারও রেকর্ড

বেশ কিছুদিন মোটামুটি স্থিতিশীল থাকার পর গতকাল রোববার দেশের পুঁজিবাজারে আবারও সর্বোচ্চ পরিমাণ লেনদেন হয়েছে। একই সঙ্গে মূল্যসূচকও অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আর এ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছে মূলত বিদ্যুত্ ও জ্বালানি খাতের শেয়ার।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে কেন্দ্র করে বিদ্যুত্ খাতে একটি আশার সঞ্চার হয়েছে। এ সফরে বিদ্যুত্ খাতে সহযোগিতার বিষয়ে দেশটির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিদ্যুত্ খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের বিশেষ ঝোঁক লক্ষ করা গেছে, যা লেনদেনের পাশাপাশি মূল্যসূচক বাড়াতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।
যোগাযোগ করা হলে মিউচুয়াল ফান্ড অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (প্রস্তাবিত) সেক্রেটারি জেনারেল মঈন আল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বিদ্যুত্ আমদানির ব্যাপারে ইতিবাচক অগ্রগতি হলে বিদ্যুত্ কোম্পানিগুলোর আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে—এমন অনুমান থেকেই হয়তো বিনিয়োগকারীরা এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
মঈন আল কাশেম আরও বলেন, এ ধরনের জাতীয় ইস্যুতে বাজারে প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যায়, বিনিয়োগকারীরা আগের তুলনায় অনেক সংবেদনশীল, যা বাজারের জন্য নিঃসন্দেহে ভালো খবর। আর লেনদেন বাড়ার খবরটি তো অবশ্যই ইতিবাচক।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল এক হাজার ৩২৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে এটি এ যাবত্কালের সর্বোচ্চ। এর আগে গত ২০ অক্টোবর এক হাজার ২৪৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। গতকালের আগ পর্যন্ত সেটিই ছিল সর্বোচ্চ লেনদেন।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল লেনদেন হয়েছে ৮০ কোটি টাকার শেয়ার। এ হিসেবে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। এর আগে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সর্বোচ্চ সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৩৬৭ কোটি টাকার শেয়ার।
ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৭৩০ পয়েন্ট অতিক্রম করেছে। ২০০১ সালে ডিএসইর সাধারণ সূচক প্রণয়ন হওয়ার পর এটিই সর্বোচ্চ সূচক। তবে সিএসইতে গতকাল বিভিন্ন মূল্যসূচকে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। স্টক এক্সচেঞ্জটির সার্বিক সূচক প্রায় ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ১৩ হাজার ৭৮০ পয়েন্ট ছাড়ালেও সিএসই-৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট কমেছে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে ২৪৪টি কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২৭টির, কমেছে ১১৩টির। অপরিবর্তিত ছিল চারটি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৭৭টি কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৪টির, কমেছে ৯৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল আটটি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানি: এস আলম কোল্ড রোল, বাটা সু, জেমিনি সি ফুড, মডার্ন ডায়িং, গ্লোবাল ইনস্যুরেন্স, ইউনাইটেড লিজিং, বঙ্গজ বিস্কুট, আইসিবি এএমসিএল, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ও এসিআই লিমিটেড।
দাম কমার শীর্ষ ১০ কোম্পানি: দ্বিতীয় আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড, মিথুন নিটিং, বিএলটিসি, মুন্নু জুটেক্স, স্ট্যান্ডার্ড ইনস্যুরেন্স, রেইনউইক যজ্ঞেশ্বর, আইসিবি, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, লিগেসি ফুট ও রংপুর ফাউন্ড্রি।
লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি: বেক্সিমকো, পাওয়ার গ্রিড, তিতাস গ্যাস, ডেসকো, যমুনা অয়েল, এবি ব্যাংক, বেক্সটেক্স, লঙ্কাবাংলা ফিন্যান্স, প্রাইম ব্যাংক ও গ্রামীণফোন লিমিটেড।

No comments

Powered by Blogger.