নেপালে প্রাসাদ হত্যাকাণ্ডে ভারতের হাত ছিল -মাওবাদী নেতা প্রচণ্ডের অভিযোগ

নেপালের মাওবাদী নেতা পুষ্প কমল দহল ওরফে প্রচণ্ড বলেছেন, নয় বছর আগে রাজপ্রাসাদে রাজা বীরেন্দ্র ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পেছনে প্রতিবেশী দেশ ভারতের হাত ছিল। শুধু তা-ই নয়, নেপালের প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা মদন ভান্ডারীর রহস্যময় মৃত্যুর পেছনেও হাত ছিল নয়াদিল্লির। প্রচণ্ডের উদ্ধৃতি দিয়ে মাওবাদীদের মুখপত্র জনদিশা ডেইলি তাদের প্রথম পৃষ্ঠায় গতকাল রোববার এ খবর প্রকাশ করে। খবর দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
মাওবাদী নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড শনিবার এক জনসভায় বলেন, ২০০১ সালের ১ জুন নেপালের নারায়ণহিতি রাজপ্রাসাদে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে যায়। নেপালের জাতীয় বিয়োগান্তক ওই ঘটনার পেছনে ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নেড়েছিল ভারত। ওই ঘটনায় রাজা বীরেন্দ্রর পরিবারের সব সদস্যই নিহত হয়।
দৃশ্যত, যুবরাজ দীপেন্দ্রর দিকেই সবার সন্দেহের আঙুল উঠেছিল। একটি তদন্ত কমিশনও ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য যুবরাজকেই প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু প্রচণ্ড বলেন, ওই ঘটনার পেছনে ছিল ভারতের ষড়যন্ত্রের হাত। প্রচণ্ড অভিযোগ করেন, রাজা বীরেন্দ্র এবং কমিউনিস্ট নেতা মদন ভান্ডারি ভারতের স্বার্থের কাছে নতি স্বীকার করেননি। এ কারণেই তাঁদের দুজনকে হত্যা করা হয়।
নেপালের রাজপ্রাসাদের উত্তাল দিনগুলোর কথা উল্লেখ করে প্রচণ্ড বলেন, রাজা বীরেন্দ্র মাওবাদী গেরিলাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন। এ লক্ষ্যে মাওবাদী ও রাজপ্রাসাদের মধ্যে গোপন যোগাযোগের জন্য তিনি তাঁর ছোট ভাই ধীরেন্দ্রকে চর হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আলোচনা শুরুর আগেই প্রাসাদ হত্যাকাণ্ড ঘটে যায়।
সাবেক এই বিপ্লবী আরও বলেন, রাজা বীরেন্দ্র নিহত হয়েছিলেন, কারণ তিনি দেশের সার্বভৌমত্ব ভারতের কাছে বিকিয়ে দিতে রাজি হননি। ওই সময় তিনি ভারতের কাছ থেকে নয় বরং চীনের কাছ থেকে সমরাস্ত্র কেনার পক্ষপাতী ছিলেন। এ কারণেই তাঁকে ভারতের বিরাগভাজন হতে হয়েছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রচণ্ড ভারতের ওপর যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। নেপালের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপালকে তিনি ভারতের পুতুল বলে মন্তব্য করেছেন। প্রচণ্ড বলেন, ভারত রিমোট কন্ট্রোলার দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মাধবকে চালাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.