রয়টার্সের প্রতিবেদন: চাপে ইউনূস সরকার, ক্রমাগত বিক্ষোভ-আন্দোলনে অস্থির দেশ
রোববার সরকারের পক্ষ থেকে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেখানে দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছাড়াই যেকোনো অসদাচরণের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের বরখাস্তু করতে পারবে বলে উল্লেখ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে গোটা আমলাতন্ত্র। সোমবার পর্যন্ত টানা তিন ধরে ওই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন তারা। অধ্যাদেশটিকে ‘দমনমূলক’ আখ্যা দিয়ে সরকারকে অবিলম্বে ওমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। আমলাতন্ত্রের ক্ষোভের মধ্যে সোমবার থেকে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষক। অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বর্জনের ডাক দিয়েছেন তারা। এছাড়া ইতিমধ্যেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের বিক্ষোভের মুখে সংস্থাটি ভেঙে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি বিভাগ স্থাপনের আদেশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যার ফলে ধর্মঘটে ইস্তফা দিয়েছে এনবিআর।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে ছাত্র নেতাদের একজন বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের সংস্কার পদক্ষেপ ও নির্বাচনী সময়ের সঙ্গে একমত না হয় তাহলে পদত্যাগ করতে পারেন ড. ইউনূস। যার ফলে দেশের রাজনীতি আরও অস্থির হয়ে ওঠে। যদিও ইউনূস সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের দায়িত্ব শেষ না করে কোথাও যাব না। ড. ইউনূস বাধার কথা জানালেও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
দ্রুত সময়ের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন ও সংস্কারের দাবির মধ্যে আটকে পড়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ড. ইউনূস বলেছেন, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। গত সপ্তাহে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে সে চাপ আরও বাড়িয়ে দেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এছাড়া দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। এমন পরিস্থিতির মধ্যে শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে একটি সভা আহ্বান করেন ড. ইউনূস। এছাড়া সপ্তাহান্তে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে- বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্র-নেতৃত্বাধীন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি।

No comments