ঋতুস্রাবের ছুটি চেয়ে হেনস্তার শিকার এক শিক্ষার্থী

ঋতুস্রাবের ছুটি চেয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন চীনের এক নারী শিক্ষার্থী। ঘটনাটি বেইজিংয়ের গেংডান ইনস্টিটিউট বিশ্ববিদ্যালয়ের। ঋতুস্রাবের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এতে ওই শিক্ষার্থীকে ট্রাউজার খুলে প্রমাণ দিতে বলেন কর্তৃপক্ষ। তারা প্রমাণ চান আদৌ ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ কিনা। এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ মানুষ। ভিডিওতে ওই তরুণীকে কলেজের এক প্রবীণ নারী কর্মীকে প্রশ্ন করতে শোনা যায়, যাদের ঋতুস্রাব হয়েছে তাদের সকলকেই কী ছুটি পাওয়ার জন্য নিজেদের ট্রাউজার খুলে দেখাতে হবে? এছাড়া কী তারা ছুটি পাবেন না? এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি হ্যা সূচক জবাব দেন। বলেন, এটা এখানকার নিয়ম। তবে বিশ্ব্যবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা ওই শিক্ষার্থী কেউই বিবিসির কাছে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওই ভিডিও অনলাইনে শেয়ার করেন। যদিও পর্ণোগ্রাফি কন্টেন্টের অভিযোগে তা অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। তবে নেটিজেনরা এর স্ক্রিনশট নিয়ে রাখেন।

চীনা টিকটক নামে পরিচিত ডুয়িনের এক ব্যবহারী বলেন, ভিডিও শেয়ারের কারণে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর আইডি ৩০ দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। ১৬মে এক বিবৃতিতে গেংডান ইনস্টিটিউট বলেছে, অনলাইনে প্রচার করা ওই ভিডিও বিকৃত করা হয়েছে। বলা হয়, যারা অসত্য ভিডিও ছড়িয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার অধিকার আছে। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এবং শিক্ষার্থীর অনুমতি নিয়েই তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া এতে কোনো সরঞ্জাম ব্যবহার না করার দাবিও করা হয়।

এদিকে ভিডিওতে দেখা যায়, প্রবীণ ওই নারী কর্মীকে শিক্ষার্থীদের শারীরিক পরিক্ষার বিষয়ে কলেজের লিখিত প্রমাণ দিতে বলছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তবে এর কোনো উত্তর না দিয়ে তিনি ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে যেতে বলেন। গেংডাম ইনস্টিটিউটের এক কর্মী স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দুতে নিউজকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির তরফে ওই নিয়ম তৈরি করা হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীরা অসুস্থতার অজুহাত দিয়ে ছুটি নিতে না পারেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি ভালোভাবে গ্রহণ করেননি। চীনা টুইটার নামে পরিচিত ওয়েইবোর এক ব্যবহারকারী লেখেন, যদি এমন মনে হয় যে, শিক্ষার্থীরা ঋতুস্রাব নিয়ে অজুহাত দিচ্ছে তাহলে কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে রেকর্ড রাখুক।

উল্লেখ্য, দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকায় যোগ হলো গেংডাম ইনস্টিটিউট। গত বছর মে ডে ছুটির মৌসুমে শিক্ষার্থীদের ভ্রমণের বিষয়ে কঠোর নির্দেশিকা জারি করে। এর মধ্যে একা ভ্রমণ, সাইকেলে ভ্রমণের মতো বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.