মঙ্গোলিয়ার রাজনীতি উত্তাল: প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আশঙ্কা

মিনারেল সমৃদ্ধ মঙ্গোলিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন বড় ধরনের পরীক্ষার মুখে। তরুণদের নেতৃত্বে চলমান বিক্ষোভ ও ছেলের বিতর্কিত বিলাসবহুল জীবনযাপন ঘিরে প্রবল চাপে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী ওইউন-এর্দেন লুভসাননামসরাই। তিনি আগামী সপ্তাহে নিজের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট ডাকার পরিকল্পনা করছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান। এতে বলা হয় এক সপ্তাহ ধরে রাজধানী উলানবাটরের প্রধান স্কয়ারে প্রতিবাদ করে যাচ্ছে তরুণরা।

মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া কিছু পোস্টে প্রধানমন্ত্রীর ২৩ বছর বয়সী ছেলে তেনমুলেনি তার বাগদত্তাকে দামি ব্যাগ, হীরার আংটি এবং একটি মার্সিডিজ-বেঞ্জ উপহার দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়। এসব ছবি সামনে আসার পর সাধারণ জনগণের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে- এই বিপুল সম্পদের উৎস কী? একজন সরকারি কর্মকর্তার পুত্র এমন জীবনযাপন কীভাবে করতে পারেন? তীব্র মূল্যস্ফীতি, সম্পদের বৈষম্য এবং খনিজ সম্পদ ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগে জনগণের ক্ষোভ বাড়ছিলই। এখন তা এসে মূলত লুভসাননামসরাই-এর বিরুদ্ধে আস্থা হারানোর রূপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে ৫৯,০০০ জনের স্বাক্ষর-সহ একটি পিটিশনে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে, এই আন্দোলন এবং বিতর্কিত লাইফস্টাইলের ইস্যুটিকে প্রেসিডেন্ট উখনাগিন খুরেলসুখের সমর্থকরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন। তারা চান, পার্লামেন্টের ক্ষমতা খর্ব করে খুরেলসুখ দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে পারেন, যদিও বর্তমানে সংবিধান অনুযায়ী একজন প্রেসিডেন্ট মাত্র একটি ছয় বছরের মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। বিশ্লেষকদের মতে, যদি লুভসাননামসরাই অনাস্থা ভোটে হেরে যান, তাহলে একজন নমনীয় প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করে পার্লামেন্টের ক্ষমতা কমিয়ে খুরেলসুখ নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে চাইবেন। খুরেলসুখ ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কের মুখে পড়েছেন। গত সেপ্টেম্বরে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মঙ্গোলিয়ায় আমন্ত্রণ জানান, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম স্ট্যাটিউটে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে মঙ্গোলিয়ার দায়িত্বের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

সম্প্রতি তিনি মস্কোর ‘ভিক্টরি প্যারেড’-এ অংশগ্রহণ করায় আরও সমালোচিত হন। ওইউন-এর্দেন লুভসাননামসরাই নিজেকে দুর্নীতি দমন সংস্থার তদন্তে সোপর্দ করেছেন। তবে এখনো জনসম্মুখে নিজের অবস্থান স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেননি। ফলে জনমনে সন্দেহ ও ক্ষোভ আরও বাড়ছে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.