‘শেখ হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন’

ভারতে বসে শেখ হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিএনপি’র উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে এক দোয়া মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। এই মিলাদ মাহফিলে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও আশু সুস্থতা কামনা এবং চলমান আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়াও অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক। বিকালে চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব এবং স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা ছাড়াও সারা দেশে গতকাল মহানগর-জেলা-উপজেলায় এই দোয়া মাহফিল হয়।  
ওদিকে বিকালে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব। এরমধ্যে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাস গুপ্তের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এই সভায় অংশ নেন।

দোয়া মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা দীর্ঘ লড়াই করেছি, তারপরে যদি মনে করেন যে, আমাদের লড়াই শেষ হয়ে গেছে তাহলে ভুল করবেন। এখন অত্যন্ত একটা ভাসমান অবস্থায় আছে। যেকোনো মুহূর্তে ভারতে বসে আছেন শেখ হাসিনা, তিনি তার সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। ইতিমধ্যে চক্রান্ত শুরু করেছেন, সেই চক্রান্ত প্রতিরোধ করাই আমাদের কাজ।

তিনি বলেন, আজকে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে আসুন আমরা সবাই সেই প্রতিজ্ঞাই আল্লাহ‘তালার কাছে করি, তিনি যেন আমাদের বিএনপি’র যে ভাবমূর্তি যেটা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তৈরি করেছেন, বেগম খালেদা জিয়া তৈরি করেছেন, তারেক রহমান সাহেব তৈরি করেছেন- সেই ভাবমূর্তিকে সবাই অক্ষুণ্ন্ন রেখে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই যে সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার এসব কথা বলছেন না, এটা একটা চক্রান্ত। এই কথা বলে ধুয়া তুলে তারা (আওয়ামী লীগ) আরেকটা ঝগড়া করতে চায়। আপনাদের দায়িত্ব নিজ নিজ এলাকায় প্রত্যেক এলাকায় নিজরা নিয়ে শান্তি বিগ্রেড তৈরি করেন, শান্তি বিগ্রেড তৈরি করে পাহারা দেবেন। সমস্ত সংখ্যালঘুদের উপাসনালয়, মন্দির, গীর্জা- এ সমস্ত পাহারা দেবেন, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, তাদের জান-মালের দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের।

তিনি বলেন, আমরা যখন সোশ্যাল মিডিয়াতে, পত্র-পত্রিকায় যে বিরূপ খবর দেখি-তখন কিন্তু আমরা আতঙ্কিত হই। আবার কোনো নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হচ্ছে যে, জনগণের ভোটকে এবং জনগণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবার জন্য আবার কোনো নব্য ফ্যাসিবাদ এসে উপস্থিত হচ্ছে কিনা। এদিক থেকে সজাগ থাকতে হবে। অর্থাৎ ঐক্য, ঐক্য, ঐক্য এবং ধৈর্যশীল অবস্থা, সহনশীল অবস্থা, ডিসিপ্লিনের মধ্যে আমাদেরকে চলতে হবে। এই কথা বলছি এজন্য যে, আজকে ম্যাডামের জন্মদিনের অনুষ্ঠান না? ক’জন এসেছেন? বৃহস্পতিবার আপনাদের প্রোগ্রাম ছিল না? ক’জন এসেছিলেন। সেভাবে আসে নাই, অনেক কম, আজকেও কম। কি জন্য? জয় হয়ে গেছে? না এই যুদ্ধকে জারি রাখতে হবে, এই সংগ্রামকে চালিয়ে যেতে হবে। তা না হলে আমরা কিন্তু অনেক বিপদে পড়ে যাবো। এক ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছি আমরা। নব্য ফ্যাসিবাদ যেন না আসতে পারে তার জন্য আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকার একেবারে নরম সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এটা মনে রাখতে হবে। তার দায়িত্ব একটা নির্বাচন করে দিয়ে যাবে তাই না। জঞ্জাল জমা হয়েছে তো। এই জঞ্জাল তো সাফ করতে হবে। এজন্য তাদেরকে কিছু সময় তো দিতে হবে। সেইভাবে কাজ করে আমাদের সংগ্রামকে জারি রাখতে হবে। ম্যাডামের যে আদর্শ তাকে অনুসরণ করতে হবে, ম্যাডামের যে বক্তব্য তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। প্রেম-ভালোবাসা দিয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে। কোনো প্রতিহিংসা নয়, কোনো প্রতিশোধ নয়।

No comments

Powered by Blogger.