কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সুমনকে বাঁচাতে পরিবারের আকুতি

গত ২০শে জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় সুমন রহমান অনিক (২১) নামে এক শিক্ষার্থী। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত কুর্মিটোলা হাসপাতালের আইসিইউতে চিৎিসাধীন রয়েছেন তিনি। এ পর্যন্ত তিনবার অস্ত্রোপচার হলেও এখনো তিনি আশঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে তার পরিবার। তাকে বাঁচাতে সাহায্যের জন্য আকুতি জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন। আহত সুমন নরসিংদীর মাধবদী পৌর শহরের সিদ্দিকনগর মহল্লার মৃত হাসেন আলীর ছেলে।

সুমনের বড়ভাই জুলহাস জানান, ৬ ভাই, ৩ বোনের সংসারে সুমন সবার ছোট। সে স্থানীয় জালপট্টি জামেয়া-ই-এমদাদিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবার দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা। পরিবারের হাল ধরতে পড়াশোনার পাশপাশি ভাইদের সঙ্গে সে স্থানীয় বাজারে কাঁচা তরকারি বিক্রি করতো। গত ২০শে জুলাই আন্দোলনকে ঘিরে সরকারের জারিকৃত কারফিউয়ের প্রথমদিনে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাধবদী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। একপর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করলে  সে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

গুলিটি তার পেটে ঢুকে পাকস্থলী ছিদ্র হয়ে পেছন দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ও পরে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ পর্যন্ত তিনবার তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছে। সম্প্রতি তার পেটে ইনফেকশন হয়ে যাওয়ায় আবারো অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানিয়েছেন তার চিচিৎসক। পাশাপাশি উন্নত চিচিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

সুমনের মা আমিরুন বেগম জানান, ছেলেদের কাঁচা তরকারি বিক্রির স্বল্প আয়ে চলে তাদের সংসার। অভাবের তাড়নায় অল্পবয়সে পড়াশোনার পাশাপাশি সুমনকেও কাজে লাগাতে হয়েছে ছেলেদের সঙ্গে। সেই ছেলেটি আজ ২৭ দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় পড়ে আছে। তার চিকিৎসায় অপারেশনসহ হাসপাতাল খরচ সরকারিভাবে বহন করলেও প্রতিদিন বেশ টাকার ওষুধের যোগান দিতে হচ্ছে নিজেদের। এতে হিমশিম  খেতে হচ্ছে তার পরিবারের। তার উপর দেশের বাইরে নিয়ে  ছেলের চিকিৎসা করানো দুঃসাধ্য ব্যাপার। এ অবস্থায় ছেলেকে বাঁচাতে তিনি বিত্তবানদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে পাশে দাঁড়ানোর আকুতি জানিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.