‘বাইরের রাষ্ট্রের মদতে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে’

১৫ই আগস্ট ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে কান ধরে ওঠবস করানো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে দাবি করেছেন সমন্বয়ক সারজিস আলম। শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলে সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ দাবি করেন। সারজিস বলেন, ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ পুলিশের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের সময় কান ধরে ওঠবস করানোর সংস্কৃতি শুরু করেছিল। তবে গতকাল ১৫ই আগস্ট কান ধরে ওঠবস করানো ও মোবাইল চেক করাসহ ঘটে যাওয়া কিছু কাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ১৫ই আগস্ট ধানমণ্ডিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেউ যদি ১৫ই আগস্ট ধানমণ্ডিতে ফুল দিতে চায় তাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাধা দিতে পারে না। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর গাড়িতে হামলার অধিকার কারও নেই। তাই এসবের সঙ্গে সমন্বয়ক বা অন্য কেউ জড়িত থাকলে বহিষ্কার এবং ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাইরের রাষ্ট্রের মদদে প্রতিবিপ্লবের নামে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন সারজিস আলম।

তিনি মনে করেন, ১৫ই আগস্ট ঘিরে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ ছদ্মবেশে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমরা ১৫ই আগস্ট রাষ্ট্রীয় আয়োজনে শোক দিবস পালনের পক্ষে না। তবে কেউ ব্যক্তিগতভাবে শোক প্রকাশ করতে চাইলে তাকে সম্মান জানাতে হবে। রাজনীতিতে আসা নিয়ে জানতে চাইলে সারজিস বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফরম কতোদিন থাকবে অথবা নতুন দল করা হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকারী শিক্ষার্থীদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, দেশকে স্থিতিশীলতায় ফিরিয়ে আনতে হলে যার যে জায়গায় দায়িত্ব তার সেখানে ফিরে যাওয়া উচিত। ধীরে ধীরে পুলিশ তাদের দায়িত্বে ফিরে আসছে।

ছাত্রসমাজের প্রতি আমাদের সরাসরি আহ্বান যেখানে যখন পুলিশের একটি টিম বা ট্রাফিকের একটি টিম আসবে তাদেরকে তাদের দায়িত্বটি বুঝিয়ে দিয়ে ছাত্রসমাজকে সেখান থেকে সরে যেতে হবে। আপনারা যে দায়িত্বটি পালন করেছেন সেটার জন্য ধন্যবাদ, কিন্তু এটি আপনাদের দায়িত্ব না। গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন থানা, আওয়ামী লীগ অফিস, স্থাপনা ও ভাস্কর্য ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের খবর আসে। পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে থানা ও ঢাকার সড়ক। এমন পরিস্থিতিতে রাস্তায় শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করে আসছে শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীরে পুলিশ কর্মস্থলে ফিরে আসলেও শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যাচ্ছে এখনো। সার্জিস আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছে আমাদের অনুরোধ, আর রাস্তায় নামার প্রয়োজন নেই। আমরা পুলিশের জায়গা থেকে, বিভিন্ন জায়গা থেকে এ কথাগুলো শুনছি পুলিশের কিছু সদস্য হয়তো তাদের জায়গা থেকে আনকমফোর্টেবল সিচ্যুয়েশনে রয়েছে। তারা যদি তাদের জায়গাটিতে আসে, স্টুডেন্টরা জানি না কি করে।

No comments

Powered by Blogger.