বাংলাদেশ সীমান্তে আটক, খাবার না পেয়ে দেড় শতাধিক গরুর মৃত্যু

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে পাচার হওয়ার সময় ৮৫০টি গরু উদ্ধার করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পরে ওই গরুগুলোকে রাখা হয় শ্রীনগর, কামথানা, কুলুবাড়ি, ফটিকছেড়া, হরিহরডৌলা, কাইয়াঢেপা এবং আরো কয়েকটি বর্ডার আউটপোস্টে।

এদিকে আবকাঠামোর অভাব থাকায় বিএসএফের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। কিন্তু পুলিশের কাছেও তেমন কোনো অবকাঠামো নেই। পরে এগিয়ে আসে দিল্লির ধ্যান ফাউন্ডেশন। আগরতলা থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে সিপাহীজলা জেলার দেবীপুর গ্রামে তারা একটি গোশালা তৈরি করে।

ত্রিপুরা সরকার এ ব্যাপারে ব্যর্থ হওয়ার পর ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দেবীপুর গ্রামের তিনশ ৬০ একর বনভূমির মধ্যে চার একর জায়গা জুড়ে ওই গোশালা তৈরি করে। এ ব্যাপারে তাদের সমঝোতা হয় রাজ্য সরকারের সঙ্গে। পরে তারাই ওই গোশালায় রাখে উদ্ধার হওয়া গরুগুলো। কিন্তু পর্যাপ্ত আবকাঠামোর অভাবে ভালো নেই গরুগুলো। অন্তত ১৫৯টি গরু মারা গিয়েছে। যথাযথ অবকাঠামো এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ গোখাদ্যের অভাবেই গরুগুলো মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দিল্লির ধ্যান ফাউন্ডেশন ওই গোশালা পরিচালনার দায়িত্বে ছিল।

দায়িত্বে থাকা ধ্যান ফাউন্ডেশনের গোশালার ভলান্টিয়ার ইনচার্জ জোশিন অ্যান্টনি জানান, ওই গোশালায় যথেষ্ট পরিমাণ গরু চরানো জায়গা নেই, যার ফলে গোখাদ্যের ব্যাপক সংকট দেখা দেয়। নিকটবর্তী সরকারি জমিতে গরুগুলোকে চরানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হলে সরকার ব্যারিকেড তৈরি করে দেয়।

অ্যান্টনি জানিয়েছেন, সরকার তাদের ওষুধ বা পশুচিকিৎসার ব্যাপারে কোনো রকম সাহায্যা করেনি।

গোশালার ভলান্টিয়ার ইনচার্জ জানান, তিনশ গরু রাখার ব্যবস্থা থাকলেও এখন সেখানে মোট সাতশ গরু রাখা হচ্ছে। অধিকাংশ গরুকেই খোলা আকাশের তলায় থাকতে হয়। ফলে এ মাসে দু সপ্তাহের ক্রমাগত বৃষ্টিতে সেগুলো প্রতিদিন ভিজেছে এবং ৪৫ টি গরুর মৃত্যু হয়েছে হাইপারথেমিয়ায়। ১০৪টি গরু মারা গিয়েছে অপুষ্টি এবং ভগ্নস্বাস্থ্যের কারণে। অভুক্ত গরুগুলোর খিদে নষ্ট করার জন্য তাদের কপার সালফেট এবং স্টেরয়েজ দেওয়া হয়েছে। এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছে বেশ কিছু গরু।

No comments

Powered by Blogger.