ভারতের জন্যও উড়তে পারে রাশিয়ার সু-৫৭ স্টেলথ জঙ্গি বিমান by মার্ক এপিস্কোপোস

আগে যেমন ধারণা করা হয়েছিল, মস্কো তার চেয়েও ব্যাপক মাত্রায় সু-৫৭ বিমানের গণ-উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয়ায় ভারতীয় বিমান বাহিনী এখন রাশিয়ার পঞ্চম প্রজন্মের এই জঙ্গি বিমান কেনার ব্যাপারে সতর্ক ইঙ্গিত দিয়েছে।

রাশিয়ান মিডিয়াকে দেয়া সাক্ষাতকারে ভারতীয় বিমান বাহিনী প্রধান বিরেন্দর সিং ধানোয়া সম্প্রতি বলেছেন: “আপনি যদি পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গি বিমানের কথা বুঝিয়ে থাকেন, তাহলে এটা নিয়ে এখনও আমরা পর্যালোচনা করিনি। আপনাদের সশস্ত্র বাহিনীতে যখন এটা যুক্ত হয়, কেবল তখনই আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। আমরা এটা পার্ফর্মেন্স দেখার পর এবং এটা আমাদের কাছে রিভিউয়ের জন্য আসার পরেই কেবল এটা কেনার ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো”।

রাশিয়া সু-৫৭ বিমান বিক্রির জন্য ভারতের কাছে বেশ কয়েক দফা প্রস্তাব দিয়েছে। এর আগে নয়াদিল্লী ২০১৮ সালে রাশিয়ার সাথে যৌথভাবে সু-৫৭ বিমান তৈরির প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসে। উভয়ে মিলে যে বিমান তৈরির কথা ছিল, সেটা এফজিএফএ নামে পরিচিত। ধানোয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে স্পষ্ট বক্তব্য যে ভারতীয় বিমান বাহিনী তাদের সম্ভাব্য আমদানির তালিকা থেকে সু-৫৭ বিমানকে এখনও সরিয়ে রাখেনি।

এফজিএফএ প্রকল্প বিলুপ্তির পেছনে প্রযুক্তিগত সমস্যার কথা বলা হলেও এর আসল কারণ মূলত রাজনৈতিক। নয়াদিল্লী মূলত তাদের মেক ইন ইন্ডিয়া পদক্ষেপ এগিয়ে নেয়ার জন্যই এফজিএফএ কর্মসূচির সাথে যুক্ত হয়েছিল। বিমানের ডিজাইন ব্লুপ্রিন্ট এবং উৎপাদন বিশেষজ্ঞ বিষয়ক সমস্ত প্রযুক্তি হস্তান্তর লক্ষ্য ছিল তাদের এবং একই সাথে উন্মুক্ত লাইসেন্সের অধিকারও চেয়েছিল তারা। ক্রেমলিন ভারতকে এই ধরনের সুবিধা দিতে স্বাচ্ছন্দ্য ছিল না বলেই কর্মসূচিটি বাতিল হয়ে যায়।

এফজিএফএ কর্মসূচিটি পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়টি এখন আর কারো বিবেচনায় নেই, কিন্তু সেটা রাশিয়ার পক্ষে কাজ করতে পারে। রাশিয়া যদি ভারতের কাছে সু-৫৭ রফতানি করতে পারে একটা পণ্য হিসেবে, যেখানে যৌথভাবে উৎপাদনের কোন বিষয় থাকছে না, তাহলে সেক্ষেত্রে রাশিয়াকে আর সেই সব নিয়ম নীতি মানতে হবে না, যেগুলোর কারণে এফজিএফএ কর্মসূচি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

বিমান বাহিনী প্রধানের বক্তব্য থেকে এটা বোঝা যাবে না যে আইএএফ সু-৫৭ বিমান যাচাই বাছাই ও এর পার্ফর্মেন্স পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সেটা কিনবেই, বরং তার বক্তব্য থেকে যেটা বোঝা গেছে, যেটা হলো নয়াদিল্লী সু-৫৭ বিমানকে ভিন্ন আমদানির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখছে। নয়াদিল্লী ও মস্কোর মধ্যে সদিচ্ছার সম্পর্ক বিদ্যমান থাকার একটা বহিপ্রকাশ এটা, সেটার সূচনা হয়েছে ২০১৮ সালে ৫.৪৩ বিলিয়ন ডলারের পাঁচটি এস-৪০০ সার্ফেস-টু-এয়ার উইপন্স সিস্টেম এব রাশিয়ান অ্যাডমিরাল গ্রিগোরোভিচ-শ্রেণীর চারটি ফ্রিগেট ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে। সেই সাথে রয়েছে উচ্চাকাঙ্ক্ষী কালাশনিকভের নতুন একে-২০৩ রাইফেল যৌথভাবে উৎপাদনের উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা।

No comments

Powered by Blogger.