বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি থেকে শিক্ষা নিন: মিয়ানমারের প্রতি শেখ হাসিনা

বাংলাদেশে বিদ্যমান ধর্মীয় সম্প্রীতি থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য মিয়ানমারের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্য বজায় রেখে দেশ কিভাবে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সেই শিক্ষা নেবে।’
গতকাল (রোববার) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা জনগণের তাদের জন্মভূমিতে বসবাস করার অধিকার সুরক্ষিত হতে হবে এবং তাদেরকে সেখানে বাস করার জন্য সার্বিক সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী, যেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে এবং এর ফলে ব্যাপক সংখ্যক রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসে।’
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার রোহিঙ্গা জনগণকে আশ্রয় প্রদানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তিনি বলেন, ‘আমরা দাবি করতে পারি, আমরা তাদেরকে কেবলমাত্র আশ্রয়ই দিইনি, সেখানে যাতে কোন প্রকার সংঘর্ষ বা সহিংসতা ঘটতে না পারে সেজন্য আমরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করি।’
রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়া হয়েছে- এ কথা পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে কোনো প্রকার দ্বন্দ্বে যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা এই সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং বিশ্বের সকল দেশ এ ব্যাপারে সাধুবাদ জানাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, কোন ধর্মেই সংঘর্ষ বা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির স্থান নেই। কিন্তু কখনো কখনো দুর্ভাগ্যজনভাবে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। তিনি ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে রামু, উখিয়া ও কক্সবাজারের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘তখন আপনারা এরকম অস্থিতিশীল পরিস্থিতির শিকার হন।’
প্রধানমন্ত্রী মন-মানসিকতা বড় এবং যথাযথ অধিকার নিয়ে দেশে বসবাস করতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ অনেক ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোক কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। স্বাধীনতার উদ্দেশ্যই ছিল সকল ধর্মের লোক সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করবে এবং প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ ধর্ম শান্তিপূর্ণভাবে পালন করবে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি দয়াল কুমার বড়ুয়া। ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দয়াল কুমার বড়ুয়া মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ৫ লাখ টাকার একটি চেক প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।

No comments

Powered by Blogger.