আরেকটি আরব বসন্ত আসন্ন!

আরব বিশ্বে দ্বিতীয় আরেকটি বিপ্লবের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দ্বিতীয় আরব বসন্ত অত্যাসন্ন। এমন এক অবস্থার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে আরবরা। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন এক্সপ্রেস। আরব ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক ভাষ্যকাররা বলছেন, দ্বিতীয় আরেকটি বিপ্লব অত্যাসন্ন। কারণ, ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে যেসব সামাজিক-অর্থনৈতিক ফ্যাক্টরের কারণে আবর বসন্ত ঘটেছিল তা এখনও বিদ্যমান। ইউনিভার্সিটি অব খার্তুমের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর মোহামেদ মাহজুব হারুন বলেছেন, আরব সমাজে এখনও রয়েছে ব্যাপক হারে অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন। কর্মক্ষেত্রে চাপ রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে আরো সামাজিক-অর্থনৈতিক অনেক ফ্যাক্টর। আরব সমাজের যুব শ্রেণীর মধ্যে রয়েছে উচ্চাকাঙ্খা। এসব কারণেই কিন্তু উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের কতগুলো দেশে সৃষ্টি হয়েছিল আরব বসন্ত। মাহজুব হারুণ বলেন, এসব ফ্যাক্টর যত দীর্ঘায়িত হবে ততই আরব জাতির মধ্যে বিভক্তি বাড়তে থাকবে। এর নাগরিকদের মধ্যে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের আকাঙ্খা বাড়তে থাকবে। মাহজুব হারুনের সঙ্গে একমত পোষণ করেন ইউনিভার্সিটি অব কাতারের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ক প্রফেসর মউদ আল ওলিমাত। তিনিও বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ফ্যাক্টারগুলো আরব বিশ্বকে আরেকটি অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ওই অঞ্চলে সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কার না ঘটলে ক্ষমতাসীনরা নতুন একটি বিপ্লব ও সহিংসতার মুখে পড়তে পারেন। তিনি আরব দুনিয়ার রাজতন্ত্রেরও সমালোচনা করেন, যারা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। মউদ আল ওলিমাত বলেন, যখন এসব নাগরিক অতি রক্ষণশীল রাষ্ট্রগুলোতে পডিরবর্তন প্রত্যক্ষ করেছেন, তখন তারা যেকোনো ভয়, ভীতিকে পিছনে ফেলে বিপ্লবে নেমে পড়তে পারেন। কাতারের রাজধানী দোহা’য় এক মিডিয়া সম্মেলনে বক্তব্যকালে বক্তারা বলেছেন, আরব বিশ্বের দেশগুলোতে যুব শ্রেণির শতকরা হার অনেক বেশি। ৪০ কোটির মতো মানুষ আছে এসব দেশে, যাদের বয়স ২৫ বছরের নিচে। আরব বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় তাদেরকে সহজেই নাড়া দেয়। রয়েছে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় ঘাটতি। চারদিকে নিষ্পেষণমুলক সমাজ ব্যবস্থা। এসব কারণে এই যুব শ্রেণি পরিবর্তনের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে। এমনই নিষ্পেষণমুলক শাসকগোষ্ঠী ও বাদশাদের কারণে তিউনিশিয়া, মিশর, সিরিয়া, ইয়েমেন, জর্ডান ও লিবিয়াতে ২০১১ সাল থেকে দেখা দিয়েছে আরব বসন্ত । তিউনিশিয়া ও জর্ডান সহিংসতার মধ্য দিয়ে তা দমাতে পেরেছে। কিন্তু ইয়েমেন, লিবিয়া ও সিরিয়া মারাত্মক গৃহযুদ্ধে ডুবে গেছে। ২০১১ সালে মিশরে প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারককে ও ২০১৩ সালের জুলাইতে মোহাম্মদ মুরসিকে পতনের আন্দোলনে কমপক্ষে ৯০০ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.