সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ছাত্রলীগ চলবে না -ঢাবি ছাত্রলীগের সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের

কোনো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ছাত্রলীগ চলবে না, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রলীগ চলবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘কারো পকেটের লোক দিয়ে ছাত্রলীগে নেতা হবে না। টাকা পয়সার কর্মী থাকবে না, আদর্শের কর্মী থাকবে। জবরদস্তি করে অযোগ্যকে নেতা বানাবেন; দুঃসময়ে হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। সাহসী, মেধাবী, চরিত্রবান নেতাই সংগঠনের সর্বস্তরে ঠাঁই পাবে। কোনো অনুপ্রবেশকারী পরগাছা যেন পার্টির নেতৃত্বে আসতে না পারে।’
রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। এসময় ওবায়দুল কাদের উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা কারো কথায় কান দেবে না। যাকে যোগ্য মনে হবে তাকেই নেতা বানাবে। ছেলে হোক, মেয়ে হোক। মেয়েদেরও অধিকার আছে।’ ছাত্রলীগের সাবেক এ সভাপতি বলেন, ‘ছাত্রলীগকে আদর্শের মহাসড়কে আসতে হবে। সুনামের ধারায় ফিরে আসতে হবে। ঐতিহ্যের ধারায় ফিরে আসতে হবে।’ সামপ্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা, দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে তোমাদের ভূমিকা কি ছিল, সেটা আত্ম-বিশ্লেষণ করে মূল্যায়ন করবে। আমি কিছু বলবো না। আত্ম-সমালোচনা এবং আত্ম-উপলব্ধির মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা নেবে। সামনে অনেক ঝড়, অনেক তুফান, নৌকাকে তীরে নিয়ে যেতে হবে। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জন করতে করতে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবো।’
এসময় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কারাগারে থাকলে জেলকোড আছে, অসুস্থতার চিকিৎসা আছে, তিনি অসুস্থ হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা  নেবে। এখানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাগজপত্র কেন যাবে। তারা (বিএনপি) মিথ্যার উপর ভর করে রাজনীতি করে। জেল কর্তৃপক্ষ আছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে, এমন একটা ভাব যেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাগজপত্র গেছে, তিনি সই করলেই তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী সই করলে কি তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন? তিনি অসুস্থ কিনা সেটা চিকিৎসকরা বলতে পারবেন।’ তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক তো আবার জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকও আছেন। জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকরা যখন সার্টিফিকেট  দেবেন তখন তো এ ব্যাপারে সন্দেহ থাকা স্বাভাবিক। তারা প্রকৃত চিত্রটা না বলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দিয়ে দেবেন। সত্যিকারের চিত্র যথাযথ কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে তুলে ধরবেন। এ ব্যাপারে সরকার অমানবিক হবে না। শেখ হাসিনার সরকার অমানবিক সরকার নয়।’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কারাগারে আছেন আদালতের সিদ্ধান্তে, অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্তে না। কিন্তু এটা নিয়ে বিএনপি নোংরা রাজনীতি করছে, যেন সরকার মামলা দিয়েছে, সরকার রায় দিয়েছে এমন একটা ভাব। আমরা তাকে দণ্ডও দেইনি, দণ্ড থেকে মুক্তিও দিতে পারবো না।’ এসময় ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাতারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা প্রতিটি বিভাগ, ইনস্টিটিউশনে কমিটি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি।’ প্রিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেন নিজেদের সর্বোচ্চ মেধা ছাত্রদের জন্য খরচ করতে পারে, সেজন্য সান্ধ্যকালীন বাণিজ্যিক কোর্স বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়ার জন্য সেতুমন্ত্রীর প্রতি জোর দাবি করেন।

No comments

Powered by Blogger.