উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয়দের সহায়তা প্রয়োজন by দীন ইসলাম

রোহিঙ্গাদের চাপে উখিয়া ও টেকনাফে স্থানীয় বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস অবস্থা। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগকৃত বনজসম্পদ, ক্ষেতখামার, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্যক্তি মালিকানাধীন পতিত জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব জায়গার পরিবেশ বিনষ্ট হতে চলেছে। এ কারণে উখিয়া- টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দারা চরম বিপাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি, গাড়ি ভাড়া ও নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। স্থানীয়দের এসব সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের খাদ্য, শিক্ষা, বাসস্থানে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। চিঠিতে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের খাদ্য, শিক্ষা ও বাসস্থানসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বিভিন্ন জায়গার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। বেড়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিত্যপণ্যের দাম। সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে এদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় আশ্রয় নিয়েছে। গেল বছরের আগস্টের পর থেকে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের পর দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এনজিও নানাভাবে শুধু রোহিঙ্গাদের সহায়তা করে আসছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সমর্থন লাভের আশায় সরকারিভাবেও রোহিঙ্গাদের সহায়তা করা হচ্ছে। অথচ বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার চাপে স্থানীয় বাসিন্দারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অবশেষে স্থানীয়দেরও সহযোগিতা করার জন্য চিঠি দেয়া হলো। এনজিও বিষয়ক ব্যুরো সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি এনজিও ২০ হাজার স্থানীয় বাসিন্দাকে ২ হাজার করে টাকা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য ৯৫২ মিলিয়ন ডলার বিদেশি সহায়তার কাজ চলছে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ স্থানীয়দের শিক্ষা, বাসস্থান ও স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য ব্যয় করা হবে। ইউএনডিপিও স্থানীয়দের সমস্যাগুলো নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী উখিয়া ও টেকনাফের মোট জনসংখ্যা ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৬৮ জন। শুমারির নিয়ম অনুযায়ী শতকরা ৫ থেকে ৬ ভাগ এই সংখ্যার সঙ্গে যোগ করলেও উখিয়া-টেকনাফের জনসংখ্যা ৫ লাখের বেশি হবে না। অথচ উখিয়া- টেকনাফের ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৩৬ একর আয়তনে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতির এই সংকট দ্রুত নিরসন না হলে নিজ দেশে স্থানীয়রা পরবাসী হয়ে যাবেন।

No comments

Powered by Blogger.