রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্ভাব্য সেরা উপায় খুঁজে বের করব: জাতিসংঘ

বক্তব্য রাখছেন নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ও পেরুর রাষ্ট্রদূত গুস্তাবো মেজা-চুয়াদ্রা
রাখাইন থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের খুব শিগগির মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে আজ (সোমবার) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা এ কথা বলেন।
নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ও পেরুর রাষ্ট্রদূত গুস্তাবো মেজা-চুয়াদ্রা বলেন, “রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আমরা প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন। কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করা যায় তার জন্য বাংলাদেশে সরেজমিন অভিজ্ঞতা নিতে এসেছি। এখান থেকে একই বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে আমরা মিয়ানমার যাব। সেখান থেকে ফিরে গিয়ে এ সমস্যার সমাধানে সম্ভাব্য সেরা উপায় খুঁজে বের করব।”
তিনি আরও বলেন, এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল নয়। অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে মিয়ানমারকে ইতিবাচক ভূমিকা নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটেনের স্থায়ী প্রতিনিধি ক্যারেন পিয়ার্স বলেন, মিয়ানমারে যে হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতন ঘটেছে তার বিচার করতে হলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত করতে হবে।
কুয়েতের স্থায়ী প্রতিনিধি মনসুর আয়াদ আল-ওতাইবি বলেন, এই সংকটে বাংলাদেশের কোনো হাত নেই। তার পরও বাংলাদেশ যে মহানুভবতা দেখিয়েছে তা মহান। ১০ লাখ মানুষকে আশ্রয় দেয়া চারটি কথা নয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিরা
সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারের উদ্দেশে রওনা দেয়।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন প্রতিনিধিদলটি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পুনর্বাসন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আবারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ দেশের ৩০ প্রতিনিধি গত শনিবার বিকেলে বাংলাদেশে আসেন। ওইদিনই তারা কক্সবাজারে যান। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দলটি গতকাল কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ড পরিদর্শনে যায়। মৃত্যুর হাত থাকে পালিয়ে এসে খোলা আকাশের নিচে হাজারো রোহিঙ্গা সেখানে মাসের পর মাস থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন।
সেনাবাহিনীর নির্যাতনে গত বছরের আগস্ট থেকে সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সব মিলিয়ে এখন বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বলছে, রোহিঙ্গাদের শত শত গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও তারা জানিয়েছে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যারও প্রমাণ মিলেছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে নিপীড়নের বিচার চাইছেন রোহিঙ্গারা

No comments

Powered by Blogger.