বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিলেন যাত্রীরা

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলা বিমানটির যাত্রীরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিলেন। কেউ নেপালী ভাষায়, কেউ ইংরেজিতে। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরের পাশে এক খালি মাঠে বিধ্বস্ত হয় যাত্রীবাহী বিমানটি। ভূমিতে পতিত হওয়ার পরই জ্বলে ওঠে আগুন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মোট ৭১ জন আরোহীর মধ্যে কমপক্ষে ৪৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন এই দুর্ঘটনায়।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধারকারীরা যখন দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের উদ্ধার করতে যান তখন বিমানটি থেকে বিশাল আকারের কালো-ধূসর ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছিল।
সামরিক বাহিনীর এক উদ্ধারকারী বলকৃষ্ণা উপাধ্যায় বলেন, নেপালিরা ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছিলেন। আর বাংলাদেশিরা ইংরেজিতে ‘হেল্প মি, প্লিজ হেল্প মি’( আমাকে বাঁচাও, দয়া করে আমাকে বাঁচাও) বলে চিৎকার করে সাহায্য চাইছিলেন। এটা ভয়াবহ ছিল।
দুর্ঘটনার সময় নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক জেফরি গ্যাটলম্যান কাঠমান্ডুতেই ঘটনাস্থল থেকে মাইল তিনেক দূরে অবস্থান করছিলেন। ঘটনার খবর শুনে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পৌঁছান তিনি। তিনি পৌঁছানোর পর তার অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রতিবেদনে লিখেন, সেখানে পোড়া প্ল্যাস্টিকের মতন গন্ধ বেরুচ্ছিল, খুবই বিষাক্ত। মাঠের ঘাসগুলো চেপ্টে গিয়েছিল, কালো হয়ে গিয়েছিল। চারপাশে ছেড়া কাগজ, ভাঙ্গা সিট, ফোমের ছেড়া অংশ ও একটি ধাতব পানির বোতল পড়ে ছিল। লেজসহ বিমানটির বড় কিছু অংশ অক্ষত থাকলেও বেশিরভাগটাই ছিল আগুনে পুড়ে ছারখার হওয়া। মাঠের পোড়া ঘাসগুলোতে সারিবদ্ধভাবে মৃতদেহ ভর্তি কতগুলো হলুদ ব্যাগ রাখা ছিল।
বিমানবন্দরে জ্বালানী সরবরাহকারী এক কো¤পানীর গাড়ি চালক কৈলাশ অধিকারী বলেন, এটা শুনে মনে হয়েছিল কোন বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। তিনি জানান, দকমকলকর্মীদের ওই আগুন নেভাতে ১৫ মিনিটের মতন সময় লেগেছিল। বিমানটির কর্মীরা জানিয়েছেন, দমকলকর্মীরা আরো দ্রুত পৌঁছাতে পারলে আরো মানুষকে বাঁচানো যেত।
তিলক নিউপানে নামের এক মধ্য-বয়সী লোককে হাসপাতালের লবি’তে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। তার চোখে পানি টলটল করছিল। তিনি কাঠমু-ুতে একটি ভ্রমণ সংস্থা পরিচালনা করেন। বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটিতে তার দুই কর্মী ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.