গুজরাট নির্বাচনে ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগ

ভারতের গুজরাট রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট শেষ হয়েছে। শনিবার গুজরাটের ১৮২ আসনের মধ্যে ৮৯টি আসনে ভোট হয়েছে। প্রথম দফার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন দলের ৯৭৭ প্রার্থী। নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। শনিবার ভোটের শুরুতে গুজরাটে ব্যবসায়ীদের এলাকা সুরাটে কয়েকটি বুথে ইভিএমে সমস্যা দেখা দেয়। কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, সুরাটে সমস্যা হতে পারে। হলও তাই। তবে নির্বাচন কমিশন জানায়, তাদের কাছে অতিরিক্ত ইভিএম আছে এবং সমস্যা দেখা দেয়ায় ইভিএমগুলো বেলা ১১টা নাগাদ পরিবর্তন করা হয়। ইভিএম সমস্যাকে বিজেপির ‘ষড়যন্ত্র’ বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, পরাজয়ের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বিরোধীরা। তিনি দাবি করেন, কয়েক মাস আগেই ভোটাররা মন স্থির করে ফেলেছেন, তারা কাকে ভোট দেবেন। গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজ প্রদেশের এই নির্বাচনকে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনে তার জনপ্রিয়তার পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা হিসেবে রাহুল গান্ধী তার দলকে কোথায় নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন- এ নির্বাচন তারই অগ্নিপরীক্ষা। প্রথম দফায় যে ৮৯ আসনে নির্বাচনে হয়েছে, তার মধ্যে বিজেপির দখলে ৬৭ এবং কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ১৬টি। ১৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ৯৩টি আসনে ভোট নেয়া হবে। ১৮ ডিসেম্বর ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনেও বিজেপি জিতবে বলে জনমত জরিপগুলোতে আভাস মিলেছে। যদিও তাদের আসন কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। এবিপি-সিডিএসের এক জরিপ বলছে, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ক্ষমতাসীন দলটি ৯১-৯৯টি আসন এবং কংগ্রেস ৭৮-৮৬টি আসন পেতে পারে। সরকার গঠনে প্রয়োজন ৯২টি আসন। গত ২৩ বছর ধরে গুজরাট শাসন করছে বিজেপি। গুজরাটে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি সকালে ভোট দেয়ার পর দাবি করেন, ‘বিজেপিই জিতবে। আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী,
কোনো ধরনের পরিবর্তনের প্রশ্নই নেই।’ অন্যদিকে, কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা আহমেদ প্যাটেলের দাবি, ‘তাদের দল ১১০টি আসন পাবে।’ তবে ইভিএমের সমস্যার খবরে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে সুবিধা নেয়ার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘বিজেপি হল সুবিধাবাদী। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা সবকিছুই করতে পারে।’ নির্বাচন কমিশন বলছে, অল্পসংখ্যক ইভিএমে সমস্যা হয়েছে, সেগুলো শনাক্ত করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আচল কুমার জ্যোতি বলেন, ‘এ নির্বাচনে ২৪ হাজার ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৭-৮টিতে সমস্যা হয়েছে।’ এদিকে শুক্রবার অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) এক প্রতিবেদনে জানায়, দ্বিতীয় দফার ৯৩টি আসনের ৮৫১ প্রার্থীর মধ্যে ৮২২ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন ফৌজদারি মামলা। প্রার্থীদের দাখিল করা হলফনামার তথ্য পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে এডিআর। প্রার্থীদের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, হত্যাচেষ্টা, নারী নির্যাতন, শ্লীলতাহানিসহ নানা ধরনের ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিজেপির ৮৮ প্রার্থীর মধ্যে ১৩ জন, কংগ্রেসের ৮৮ প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জন, এনসিপির ৭৪ প্রার্থীর মধ্যে ২ জন, আম আদমি পার্টির ৭ জন প্রার্থীর মধ্যে একজন এবং নির্দলীয় ৩৪৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

No comments

Powered by Blogger.