ইমরান সরকারের গণসংযোগে আ’লীগ নেতাদের ঘুম নেই

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে আসছেন- এমন প্রশ্ন এখন এলাকার মানুষের মুখে মুখে। প্রশ্নটা আরও জোরালো হয়ে উঠেছে যখন ইমরান বিশাল মোটরসাইকেল বহর নিয়ে বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম-৪ নির্বাচনী এলাকায় সফর শুরু করেন। ওই দিন রৌমারী, বড়াইকান্দি, দাঁতভাঙ্গা, সাহেবের আলগা, চরশৌলমারী ও কর্তিমারী এলাকায় সব শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। ঈদে গ্রামের বাড়িতে সস্ত্রীক বেড়াতে এসে ইমরান নির্বাচনী মাঠ জমিয়ে তোলেন। তার গণসংযোগে সাধারণ মানুষ খুশি হলেও ঘুম হারাম হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের। আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে আসছেন- এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘না, আপাতত নির্বাচনে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। আর আমি তো কোনো দলের নই। আমি সবার। মানুষের অধিকার নিয়ে আমার কথা বলা। নির্যাতিতদের পক্ষে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনমত গড়ার চেষ্টা করি। তবে হ্যাঁ, রৌমারী ও রাজীবপুর দেশের মধ্যে অবহেলিত এলাকা। উন্নয়ন কার্যক্রমে আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়। আমি সব দলের বিশিষ্টজনকে এক সঙ্গে করে এলাকার উন্নয়নের দাবি জানাব। এ ক্ষেত্রে জাগ্রত কুড়িগ্রাম একটা প্লাটফরম হতে পারে।’ ইমরান এইচ সরকারের নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে সাধারণ মানুষের মতামত জানার চেষ্টা করা হয়। রাজীবপুর বটতলার শহীদুর রহমান নামের এক ভ্যানগাড়িচালক বলেন, ‘তিনি নির্বাচনে এলে আমাদের জন্যই তো ভালো। তিনি এমপি হলে মন্ত্রী হয়ে যাবেন। এর ফলে আমাদের অবহেলিত এলাকার অনেক উন্নয়ন ঘটবে। ইমরান এইচ সরকার নির্বাচন করলে আমরা সাধারণ ভোটাররা তাকেই ভোট দেব।’ শাহালম মিয়া নামের এক সিএনজিচালক বলেন, ‘ইমরান নির্বাচন করলে এক চান্সে পার হয়ে যাবে। তাকে ভোট দিয়ে আরও এগিয়ে নেয়া তো আমাদের দায়িত্ব।’ রৌমারীর চরশৌলমারী বাজারের আবদুর রহিম নামের এক চা দোকানি বলেন, ‘ইমরান আমগর বাজারে আইছিল। ছোটবড় সবার সঙ্গে কথা বলেছে। আমার মনে হয় শেখ হাসিনা তাকেই মনোনয়ন দেবেন, পারও হবে বিপুল ভোটে। আমগর এরহম একটা নেতাই দরকার। যে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে সংসদে কথা বলতে পারবে।’ আজিবর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ইমরান যদি নির্বাচন করে তাহলে আমরা তাকেই ভোট দেব।’ তবে এলাকার সাধারণ ভোটাররা ইমরান নির্বাচনে আসুক সেটাই চায়। সরেজমিন ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে ওইসব তথ্য জানা গেছে। সাধারণ ভোটাররা ইমরান এইচ সরকারকে চাইলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সিংহভাগই তা চান না। এ প্রসঙ্গে রাজীবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল আলম বলেন, ‘ইমরান এইচ সরকার তো সব সময়ই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা কয়। প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে। সে আওয়ামী লীগের কেউ নয়। তাই আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়ার প্রশ্নই আসে না। মনোনয়ন পেলেও রাজীবপুর আওয়ামী লীগ তার পক্ষে মাঠে নামবে না।’ একই ধরনের কথা বলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল হাই সরকারও। অপরদিকে রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক এমপি জাকির হোসেন বলেন, ‘ইমরান আওয়ামী লীগ করে না। তার চলাফেরা বাম দলের নেতাদের সঙ্গে। উপজেলা বা জেলা আওয়ামী লীগের কোনো সদস্যও না তিনি। তারপরও আওয়ামী লীগ যদি তাকে মনোনয়ন দেয় আমাদের তা মেনে নিতে হবে।’

No comments

Powered by Blogger.