জাপানী তরুণ-তরুণীদের এই অবস্থা!

জাপানের তরুণরা ক্রমেই প্রেম বা যৌনতার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে বলে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে। কখনোই শারীরিক সম্পর্কে জড়াননি বা এখন কোনো সম্পর্ক নেই, এ রকম তরুণের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে।
জাপানের যৌনতা নানা রকমফেরের জন্য জাপানের নামডাক রয়েছে। বিশ্বের প্রথম লাভ হোটেলও চালু হয় জাপানেই। কিন্তু দেশটির তরুণদের মধ্যে এ বিষয়ে আগ্রহ কেমন?
বিবিসি সংবাদদাতা রুপার্ট উইংফিল্ড-হেইজের কাছে আনো মাতসুই নামের ২৬ বছরের এক তরুণ বলছেন, ‘এ বিষয়ে আমার ঠিক আত্মবিশ্বাস নেই। মেয়েদের কাছে আমি কখনোই জনপ্রিয় ছিলাম না। একবার একটি মেয়েকে আমি ডেটিংয়ের জন্য বলেছিলাম, সে না বলে দেয়। সেটাই আমাকে আহত করে।’
যে তরুণ জাপানীরা যৌনতাহীন জীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে, তাদেরই একজন আনো মাতসুই।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ১৮ থেকে ৩৪ বছরের তরুণদের ৪৫ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের কখনোই কোনো শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। ৬৪ শতাংশ বলছে, তারা কোনো প্রেম বা সম্পর্কে নেই।
মি. মাতসুই বলছেন, ‘আমার মতো অনেক পুরুষ রয়েছে, যারা নারীদের ব্যাপারে সংকোচ বোধ করেন। কারণ প্রত্যাখ্যাত হওয়ার চেয়ে বরং অন্য কিছুতে মনোযোগ দেয়াই ভালো।’
কিন্তু এ বিষয়ে জাপানের মেয়েদের অভিমত কি?
৪৫ বছরের একজন শিল্পী, রোকুডেনাশিকো বলছেন, ‘একটি সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়তো একটি ছেলের জন্য খুব সহজ ব্যাপার নয়। এজন্য তাকে প্রথমে একটি মেয়েকে ডেটিংয়ে নিয়ে যাবার প্রস্তাব দিতে হবে। এতসব ব্যাপার হয়তো অনেক তরুণ করতে চায় না। বরং তারা ইন্টারনেটে পর্ন দেখে যৌন তৃপ্তি পায়।’
জাপানী তরুণরা না হয় ইন্টারনেট থেকে যৌন তৃপ্তি পেলো। কিন্তু জাপানি তরুণীরা?
হিসাব কর্মকর্তা ২৪ বছরের আনা বলছেন, যৌনতার চেয়েও তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভালো খাবারদাবার আর ঘুম।
তিনি বলছেন, ‘যৌনতা হলো এমন কিছু, যার আসলে আমার দরকার বা চাহিদা নেই।’
আনা বলছিলেন, ‘আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তখনি আমি প্রথম আমার কঠোর বাবা-মায়ের শাসন থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ পেতে শুরু করলাম। আমি বন্ধুদের সঙ্গে রাত করে বাইরে থাকা বা পানীয় পান করার সুযোগ পেলাম। একজন প্রেমিক হয়তো আমার সেই স্বাধীনতা সীমিত করে ফেলবে, যা আমি চাই না।’
ইন্টারনেট যৌনতা, আত্মকেন্দ্রিকতা বা নিজেকে লুকিয়ে রাখা, কারণ যাই হোক না কেন, গবেষণায় জানা যাচ্ছে, তরুণ জাপানীদের অর্ধেকই কোনোরকম প্রেম বা যৌন অভিজ্ঞতা ছাড়া তাদের ত্রিশ বছর বয়স পার করতে চলেছেন।
সূত্র: বিবিসি

No comments

Powered by Blogger.