মোদিকে ‘দোস্ত’ বললেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী

ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইসরাইল সফর করছেন নরেন্দ্র মোদি। তাকে লালগালিচায় অভ্যর্থনা জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। হিন্দিতে জানিয়েছেন স্বাগত। মোদিও জবাব দিয়েছেন হিব্রু ভাষায়। প্রটোকল ভেঙে মঙ্গলবার তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে মোদিকে অভ্যর্থনা জানান নেতানিয়াহু। এ সময় মোদিকে নেতানিয়াহু হিন্দিতে বলেন, ‘আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি, দোস্ত। এমন একটি দিনের আমরা অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছি। কারণ এটা সত্যিকার অর্থে আপনার ঐতিহাসিক সফর।’ মোদিও হিব্রু ভাষায় জবাব দেন, ‘শালোম (হ্যালো)। এই দেশে এসে আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি।’ বুধবার মোদি জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সম্মেলনে অংশ নেন। এ সময় মোদি বলেন, ‘এটা আমার কাছে অত্যন্ত গৌরবের বিষয় যে, প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইসরাইলে আসার সুযোগ পেলাম। মোদি বলেন, ‘উঁচু হারে প্রবৃদ্ধিকে ধরে রাখতে এবং সব ক্ষেত্রে বিকাশের জন্য ইসরাইলকে আমরা অত্যন্ত মূল্যবান সঙ্গী হিসেবেই দেখি। উন্নয়নের প্রশ্নে আমাদের দু’দেশকেই নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। কিন্তু যারা হিংসার বিরুদ্ধে, তারা এই লড়াই চালিয়ে যেতে প্রস্তুত।’ নেতানিয়াহু বলেন, ‘সংস্কৃতি, ইতিহাস, গণতন্ত্র এবং প্রগতির প্রতি ভারতের যে দায়বদ্ধতা, তার ভক্ত ইসরাইল। ভক্ত ভারতীয় গণিত ও যোগব্যায়ামেরও।’ যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা নিয়েও কথা বলেন তারা।
মোদি বলেন, ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে যৌথ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার পাশাপাশি আমাদের সমাজকে সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সহযোগিতা তৈরি করা হবে।’ নেতানিয়াহু তার জেরুজালেমের বাড়িতে মোদিকে আমন্ত্রণ জানান। তবে মোদি থাকছেন বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ হোটেলে। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, কিং ডেভিড হোটেলে তার জন্য নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোদি ও তার সফরসঙ্গীদের জন্য মোট ১১০টি কক্ষ দিয়েছে হোটেলটি। হোটেলের ম্যানেজার জানান, ‘আমরা এখানে ক্লিনটন, বুশ ও ওবামাকে আতিথেয়তা দিয়েছি। কিছুদিন আগে ট্রাম্পও এখানে থেকেছেন। এখন আমাদের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি রয়েছেন।’ ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ২৫ বছর পর তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে ভারত। সফরে সাইবার প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা- এই তিনটি ক্ষেত্রেই ভারত-ইসরাইল সহযোগিতার কথা ঘোষণা করা হবে। ২৫ বছর আগে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হলেও মোদির আগে ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রী তেল আবিব সফর করেননি। তবে বিগত বছরগুলোতে প্রতিরক্ষা ও সন্ত্রাস দমনে একসঙ্গে কাজ করছে দুই দেশ। বর্তমানে ভারতে তৃতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের মতে, প্রতি বছর দুই দেশের মাঝে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র ব্যবসা হয়। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও রাডার সিস্টেমের মতো সামরিক সরঞ্জাম কেনাবেচা নিয়েও কথা বলবেন দুই নেতা।

No comments

Powered by Blogger.