বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ২ অতিরিক্ত ডিআইজি

পুলিশের দু’জন অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শককে (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। এরা হলেনÑ মো. বখতিয়ার আলম ও ইয়াসমিন গফুর। এর মধ্যে ইয়াসমিন গফুর বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে বাংলাদেশে প্রথম পুলিশ সুপার। গত ২ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাদের অবসর দেয়ার কথা জানানো হয়। এর আগে ইয়াসমিন গফুরের স্বামী অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মাজহারুল হককেও বর্তমান সরকারের আমলে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় ১৯৭৪ সালের গণকর্মচারী অবসর আইনের ৯(২) ধারায় সরকার তাদের অবসর দেয়া হয়। তবে তারা অবসরজনিত সব সুবিধা পাবেন। এ নিয়ে গত দুই বছরে পুলিশের পাঁচ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হল। সূত্র বলছে, গত বছরের জানুয়ারিতে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শাহজামান রাজকে। এরপর অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) এসএম হাফিজুর রহমান ও পুলিশ সুপার মর্তুজা আলীকে একই কায়দায় অবসরে পাঠানো হয়। এর আগে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডিআইজি মাহফুজুল হক ও মাজেদুল হককে অবসর দেয়া হয়। এছাড়া ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও ফারুক আহমেদ, পুলিশ সুপার কোহিনুর মিয়া ও সহকারী পুলিশ সুপার গিয়াস উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। আর সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) খোদা বখস চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজিপি বজলুর রহমান, মিজানুর রহমান ও ডিআইজি আনিসুর রহমানকে দীর্ঘদিন ওএসডি করে রাখার পর অবসরে পাঠানো হয়। তবে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া এসব কর্মকর্তা জোট সরকারের আমলে সুবিধাভোগী বলে পরিচিত। এদিকে গ্রেফতার এড়াতে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের মধ্যে ডিআইজি খান সাঈদ হাসান, অতিরিক্ত ডিআইজি মাজহারুল হক, এসপি কোহিনুর মিয়া, এসপি ওবায়দুর রহমান ও এএসপি গিয়াসউদ্দিন রিমন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন রিমন বিদেশে আছেন। সূত্র বলছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১১ সালের ৩ জুলাই সিআইডি ৩০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে। চার্জশিটে তখন ওবায়দুর রহমান, খান সাঈদ হাসানসহ সাবেক ও বর্তমান আট পুলিশ কর্মকর্তাকে পলাতক আসামি হিসেবে দেখানো হয়। তাদের মধ্যে খান সাঈদ হাসান এবং ওবায়দুর রহমান ছাড়া অপর ছয়জন আদালতে আÍসমর্পণ করেন। ওবায়দুর রহমান এবং খান সাঈদ হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এছাড়া ময়মনসিংহের নান্দাইলে জোড়া খুন এবং অ্যাডভোকেট শান্তার মামলার আসামি হয়ে গত ৭ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সাবেক হাওয়া ভবন ঘনিষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত এসপি কোহিনুর মিয়া। ২০০৭ সালে তাকে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত করা হয়। ২০১০ সালের অক্টোবরে এসপি কোহিনুর এবং অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাজহারুল হককে ধরতে দফায় দফায় অভিযান চালায় পুলিশ। এছাড়া হাওয়া ভবন সংশ্লিষ্ট এএসপি গিয়াসউদ্দিন রিমন ২০০৯ সালের ট্রেনিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে আর দেশেই ফেরেননি। এর  আগে বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তিন দফায় পুলিশের মোট ৬২ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.