মনোনয়ন পেতে মরিয়া আ’লীগের এমপিরা

আগামী নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন পেতে মরিয়া আওয়ামী লীগের এমপিরা। সেই লক্ষ্যে যা যা করার তার সবই করছেন তারা। জনসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন নিজ নিজ এলাকায়। নানা মাধ্যমে দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে। শুধু তা-ই নয়, গায়ে কাদা মেখে মাটিকাটা, বাঁধ নির্মাণ, শ্রমিকদের সাথে বসে পান্তা খাওয়া, ভিুকের বাড়িতে গিয়ে ইফতার করা, প্রতিবন্ধীকে চাকরি দেয়া, নিজের জন্য কেনা ঈদের জামা শ্রমিকের গায়ে পরিয়ে দেয়া, রিকশা চালানো এমনকি হালচাষও করছেন অনেক এমপি। সস্তা জনপ্রিয় হতে এসব দুর্লভ দৃশ্য আবার নিজেদের ফেসবুক পেজে তুলে ধরছেন নিজেরাই। তা আবার নিমিষেই শেয়ার করছেন সংশ্লিষ্ট ওইসব এমপির সমর্থক নেতাকর্মীরা। তবে এমপিদের এমন সব কর্মকাণ্ডে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে খোদ দলের মধ্যেই। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা ধরনের তির্যক মন্তব্য করছেন অনেকে। কেউ কেউ এটিকে এমপিদের সস্তা জনপ্রিয় হওয়ার নাটক বলে আখ্যায়িত করেন। আবার সংবাদের শিরোনাম হওয়ার কৌশল বলে মন্তব্য করছেন কেউ কেউ। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকায় এমনসব কাজের ছবি এসেছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে। তবে শুরুতে আলোচনায় আসে কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের নাম। তিনি এলাকার রাস্তা মেরামতের কাজ করে আলোচনায় আসেন। গত মে দিবসে চালকের আসনে বসে রিকশাচালককে রিকশায় চড়িয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর মহান মে দিবস স্মরণে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী শ্রমিকদের মধ্যে রিকশা ও ভ্যান বিতরণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে ১০ জন শ্রমিককে ১০টি রিকশা ও ভ্যান এবং অনুদান বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী। এরপর ওই রিকশায় অনুদানপ্রাপ্ত শ্রমিককে বসিয়ে নিজেই রিকশা চালান প্রতিমন্ত্রী। পরে ২১টি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সিংড়া উপজেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তিনি। এর কয়েক দিন আগে পলক একটি স্থাপনা তৈরির জন্য টুকরিতে করে মালামাল নিয়ে গেছেন মাথায় করে। তবে তার হাসিমাখা মুখে মাথায় টুকরির ছবি ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। গত ১৮ জুন সাধারণের সাথে মিশে কাজ করার ধারাবাহিকতায় যোগ হয় আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির নাম। অতিবৃষ্টিতে তিগ্রস্ত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় সড়ক মেরামতে মাটি কাটেন তিনি। মাটি কাটার ছবিটি সাথে সাথেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। চিরাচরিত শার্ট-প্যান্ট আর স্যুট পরা হাছানকে যারা এত দিন দেখেছেন, তারা লুঙ্গি, হাতাকাটা গেঞ্জি পরা আর মাথায় মাটির টুকরি বয়ে নিয়ে যাওয়া হাছানকে দেখে অবাক হয়েছেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের ফেসবুক পেজে চাকরি চেয়ে আবেদন করেছিলেন রাজবাড়ীর দুই পায়ে শক্তি না-থাকা তরুণ মসিউল আজম রাজিব। কাজও হয়েছে তাতে। পাংশা সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করা এই প্রতিবন্ধী তরুণের জন্য চাকরির ব্যবস্থাও করেন প্রতিমন্ত্রী। ১৫ জুন তারানা হালিম তার ফেসবুক পেজে লিখেন, ‘অদম্য ইচ্ছাশক্তির ওপর ভর করে স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে মাস্টার্স পাস করা শারীরিক প্রতিবন্ধী রাজিব তার ফেসবুক পেজে চাকরি চেয়েছিল। তার এই ছোট্ট ইচ্ছে পূরণ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’ যাদের জন্য বলার কেউ নেই, তাদের সবার জন্য কিছু করতে পারার ইচ্ছাও ব্যক্ত করা হয় স্ট্যাটাসে। তিনি বলেন, ‘সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন; যাদের বলার কেউ নেই, তাদের জন্য কিছু করার তৌফিক যেন আল্লাহ আমাকে দেন’-লিখেন তারানা। জামালপুরের নারী সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ বেবী সম্প্রতি তার নিজ নির্বাচনী এলাকা সফরকালে এক দরিদ্র পথশিশুর সাথে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় শিশুটি এমপিকে তার বাড়ি যাওয়ার দাওয়াত দিলে সাথে সাথে তার হাত ধরে ছুটে যান তিনি। পরে শিশুটির হাত ধরে চলা এবং ছাপরা ঘরে বসা অবস্থার ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন এমপি নিজেই। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, দরিদ্র, অসহায় ও গৃহহীনদের জন্য কিছু করার স্বপ্নের কথা। তবে এসব কাজে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন সাতীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এম জগলুল হায়দার। নদীভাঙন কবলিত এলাকায় বাঁধ নির্মাণে অংশগ্রহণ, মাটি কাটার বিরতিতে শ্রমিকদের সাথে বসে পান্তাভাত খাওয়া, রমজানে বাজারখরচ করে অসহায় মানুষের বাড়িতে যাওয়া, ভিুকের বাড়িতে ইফতার করা, নিজের জন্য কেনা ঈদের পাঞ্জাবি ভ্যানচালককে পরিয়ে দেয়ার পর এবার কৃষকদের উৎসাহিত করতে নিজে লাঙলের মুঠি হাতে জমি চাষে অংশ নিলেন এই সংসদ সদস্য। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাতীরার শ্যামনগর সদরের হায়বাদপুর অভিমুখে রাস্তার পাশে আধুনিক বীজত্রে তৈরির প্রদর্শনী েেতর উদ্বোধনের সময় তিনি লাঙল দিয়ে জমি চাষ করেন। কৃষকদের উৎসাহ দিতে লুঙ্গি পরে খালি পায়ে কোমরে গামছা বেঁধে মাথায় টোপর লাগিয়ে জমিতে নেমে পড়েন এমপি জগলুল। বেশ কয়েকবার প্রদণি করার পর তিনি জমি থেকে চলে আসেন। সংসদ সদস্যের এমন কর্মকাণ্ড দেখে সেখানে উপস্থিত অনেকেই বিস্মিত হন। এমপির হালচাষ করার ছবি সাথে সাথেই ভাইরাল হয়ে যায় ফেসবুকে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের সর্বশেষ পার্লামেন্টারি পার্টির সভায় দলীয়প্রধান শেখ হাসিনার হুঁশিয়ারি উচ্চারণের পরই এমপিদের এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। ওই সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘এবারের নির্বাচন অনেক কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। তাই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো এবার আমি আর কারো দায়িত্ব নিতে পারব না। নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়তা থাকলে মনোনয়ন দেয়া হবে, জনপ্রিয়তা না থাকলে মনোনয়ন নয়।’ সে জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ পারফরম্যান্সে নেমেছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিরা। জনগণের মন জয়ে তারা নানা ধরনের কাজে নেমেছেন। এর মাধ্যমে এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের চেষ্টা করছেন সংসদ সদস্যরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা এমপিদের এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বলেন, ‘আইন প্রণেতাদের কাজ এগুলো নয়। কারণ, জনগণ ভোট দিয়ে তাদের সংসদে পাঠিয়েছে আইন প্রণয়নের জন্য। এসব কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কর্তৃপক্ষ রয়েছে।’ এমপিদের এসব কর্মকাণ্ডে বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো কাজের উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রতীকীভাবে সেই কাজ শুরু করা হতো। কিন্তু ইদানীং সস্তা জনপ্রিয় হতে এমপিরা যেন এসব কাজের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। আসলে তারা এসব কাজের মাধ্যমে এমপি পদকে হাসির খোরাকে পরিণত করেছেন, যা মোটেও কাম্য নয়।’ আগামী নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন পেতে মরিয়া আওয়ামী লীগের এমপিরা। সেই লক্ষ্যে যা যা করার তার সবই করছেন তারা। জনসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন নিজ নিজ এলাকায়। নানা মাধ্যমে দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে। শুধু তা-ই নয়, গায়ে কাদা মেখে মাটিকাটা, বাঁধ নির্মাণ, শ্রমিকদের সাথে বসে পান্তা খাওয়া, ভিুকের বাড়িতে গিয়ে ইফতার করা, প্রতিবন্ধীকে চাকরি দেয়া, নিজের জন্য কেনা ঈদের জামা শ্রমিকের গায়ে পরিয়ে দেয়া, রিকশা চালানো এমনকি হালচাষও করছেন অনেক এমপি। সস্তা জনপ্রিয় হতে এসব দুর্লভ দৃশ্য আবার নিজেদের ফেসবুক পেজে তুলে ধরছেন নিজেরাই। তা আবার নিমিষেই শেয়ার করছেন সংশ্লিষ্ট ওইসব এমপির সমর্থক নেতাকর্মীরা। তবে এমপিদের এমন সব কর্মকাণ্ডে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে খোদ দলের মধ্যেই। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা ধরনের তির্যক মন্তব্য করছেন অনেকে। কেউ কেউ এটিকে এমপিদের সস্তা জনপ্রিয় হওয়ার নাটক বলে আখ্যায়িত করেন। আবার সংবাদের শিরোনাম হওয়ার কৌশল বলে মন্তব্য করছেন কেউ কেউ। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকায় এমনসব কাজের ছবি এসেছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে। তবে শুরুতে আলোচনায় আসে কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের নাম। তিনি এলাকার রাস্তা মেরামতের কাজ করে আলোচনায় আসেন। গত মে দিবসে চালকের আসনে বসে রিকশাচালককে রিকশায় চড়িয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর মহান মে দিবস স্মরণে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী শ্রমিকদের মধ্যে রিকশা ও ভ্যান বিতরণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে ১০ জন শ্রমিককে ১০টি রিকশা ও ভ্যান এবং অনুদান বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী। এরপর ওই রিকশায় অনুদানপ্রাপ্ত শ্রমিককে বসিয়ে নিজেই রিকশা চালান প্রতিমন্ত্রী। পরে ২১টি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সিংড়া উপজেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তিনি। এর কয়েক দিন আগে পলক একটি স্থাপনা তৈরির জন্য টুকরিতে করে মালামাল নিয়ে গেছেন মাথায় করে। তবে তার হাসিমাখা মুখে মাথায় টুকরির ছবি ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। গত ১৮ জুন সাধারণের সাথে মিশে কাজ করার ধারাবাহিকতায় যোগ হয় আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির নাম। অতিবৃষ্টিতে তিগ্রস্ত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় সড়ক মেরামতে মাটি কাটেন তিনি। মাটি কাটার ছবিটি সাথে সাথেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। চিরাচরিত শার্ট-প্যান্ট আর স্যুট পরা হাছানকে যারা এত দিন দেখেছেন, তারা লুঙ্গি, হাতাকাটা গেঞ্জি পরা আর মাথায় মাটির টুকরি বয়ে নিয়ে যাওয়া হাছানকে দেখে অবাক হয়েছেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের ফেসবুক পেজে চাকরি চেয়ে আবেদন করেছিলেন রাজবাড়ীর দুই পায়ে শক্তি না-থাকা তরুণ মসিউল আজম রাজিব। কাজও হয়েছে তাতে। পাংশা সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করা এই প্রতিবন্ধী তরুণের জন্য চাকরির ব্যবস্থাও করেন প্রতিমন্ত্রী। ১৫ জুন তারানা হালিম তার ফেসবুক পেজে লিখেন, ‘অদম্য ইচ্ছাশক্তির ওপর ভর করে স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে মাস্টার্স পাস করা শারীরিক প্রতিবন্ধী রাজিব তার ফেসবুক পেজে চাকরি চেয়েছিল। তার এই ছোট্ট ইচ্ছে পূরণ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’ যাদের জন্য বলার কেউ নেই, তাদের সবার জন্য কিছু করতে পারার ইচ্ছাও ব্যক্ত করা হয় স্ট্যাটাসে। তিনি বলেন, ‘সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন; যাদের বলার কেউ নেই, তাদের জন্য কিছু করার তৌফিক যেন আল্লাহ আমাকে দেন’-লিখেন তারানা। জামালপুরের নারী সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ বেবী সম্প্রতি তার নিজ নির্বাচনী এলাকা সফরকালে এক দরিদ্র পথশিশুর সাথে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় শিশুটি এমপিকে তার বাড়ি যাওয়ার দাওয়াত দিলে সাথে সাথে তার হাত ধরে ছুটে যান তিনি। পরে শিশুটির হাত ধরে চলা এবং ছাপরা ঘরে বসা অবস্থার ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন এমপি নিজেই। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, দরিদ্র, অসহায় ও গৃহহীনদের জন্য কিছু করার স্বপ্নের কথা। তবে এসব কাজে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন সাতীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এম জগলুল হায়দার। নদীভাঙন কবলিত এলাকায় বাঁধ নির্মাণে অংশগ্রহণ, মাটি কাটার বিরতিতে শ্রমিকদের সাথে বসে পান্তাভাত খাওয়া, রমজানে বাজারখরচ করে অসহায় মানুষের বাড়িতে যাওয়া, ভিুকের বাড়িতে ইফতার করা, নিজের জন্য কেনা ঈদের পাঞ্জাবি ভ্যানচালককে পরিয়ে দেয়ার পর এবার কৃষকদের উৎসাহিত করতে নিজে লাঙলের মুঠি হাতে জমি চাষে অংশ নিলেন এই সংসদ সদস্য। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাতীরার শ্যামনগর সদরের হায়বাদপুর অভিমুখে রাস্তার পাশে আধুনিক বীজত্রে তৈরির প্রদর্শনী েেতর উদ্বোধনের সময় তিনি লাঙল দিয়ে জমি চাষ করেন। কৃষকদের উৎসাহ দিতে লুঙ্গি পরে খালি পায়ে কোমরে গামছা বেঁধে মাথায় টোপর লাগিয়ে জমিতে নেমে পড়েন এমপি জগলুল। বেশ কয়েকবার প্রদণি করার পর তিনি জমি থেকে চলে আসেন। সংসদ সদস্যের এমন কর্মকাণ্ড দেখে সেখানে উপস্থিত অনেকেই বিস্মিত হন। এমপির হালচাষ করার ছবি সাথে সাথেই ভাইরাল হয়ে যায় ফেসবুকে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের সর্বশেষ পার্লামেন্টারি পার্টির সভায় দলীয়প্রধান শেখ হাসিনার হুঁশিয়ারি উচ্চারণের পরই এমপিদের এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। ওই সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘এবারের নির্বাচন অনেক কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। তাই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো এবার আমি আর কারো দায়িত্ব নিতে পারব না। নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়তা থাকলে মনোনয়ন দেয়া হবে, জনপ্রিয়তা না থাকলে মনোনয়ন নয়।’ সে জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ পারফরম্যান্সে নেমেছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিরা। জনগণের মন জয়ে তারা নানা ধরনের কাজে নেমেছেন। এর মাধ্যমে এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের চেষ্টা করছেন সংসদ সদস্যরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা এমপিদের এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বলেন, ‘আইন প্রণেতাদের কাজ এগুলো নয়। কারণ, জনগণ ভোট দিয়ে তাদের সংসদে পাঠিয়েছে আইন প্রণয়নের জন্য। এসব কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কর্তৃপক্ষ রয়েছে।’ এমপিদের এসব কর্মকাণ্ডে বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো কাজের উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রতীকীভাবে সেই কাজ শুরু করা হতো। কিন্তু ইদানীং সস্তা জনপ্রিয় হতে এমপিরা যেন এসব কাজের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। আসলে তারা এসব কাজের মাধ্যমে এমপি পদকে হাসির খোরাকে পরিণত করেছেন, যা মোটেও কাম্য নয়।’

No comments

Powered by Blogger.