জয়ললিতার চা বাগান ঘিরে রহস্যময় সিরিজ খুন

ভারতে তামিলনাডু রাজ্যের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার চা বাগানকে কেন্দ্র করে গত পাঁচদিন ধরে যা চলছে, সেরকমটা দেখা যায় ইংরেজি থ্রিলার ছবিতেই। প্রথমে একটা খুন, তারপর একে একে সন্দেহভাজন খুনিদেরও পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা। এক সন্দেহভাজন খুনির মৃত্যু, তারপর অন্যজনের অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাওয়া! তারপরে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির নথির হদিস গায়েব! খবর বিবিসির। পুলিশ বলছে, নীলগিরি পাহাড়ের কোঢানাড এলাকায় জয়ললিতার যে বিশাল চা বাগানটি রয়েছে, তার এক রক্ষী ওম বাহাদুর খুন হন ২৪ এপ্রিল রাতে। সেই রাতে বাগানে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতকারী। বাগানের বাংলো বাড়িটিতে চালানো হয় লুটপাট। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে যে দুটি গাড়িতে করে এসেছিল হামলাকারীরা। তদন্ত করে পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে জয়ললিতারই প্রাক্তন গাড়িচালক কনগরাজের ওপরে। তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী শ্যামও ওই ঘটনায় জড়িত ছিল বলে পুলিশের সন্দেহ হয়। তিনজনকে গ্রেফতারও করা হয়। আর আহত রক্ষীর বয়ানের ওপর ভিত্তি করে হামলাকারীদের চেহারার স্কেচ তৈরি করে পুলিশ। তারপরেই শুক্রবার রাতে একটি গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে- সালেম জেলায় একটি বাইকে প্রচণ্ড গতিতে ধাক্কা দেয় একটি গাড়ি। ঘটনাস্থলেই বাইক আরোহীর মৃত্যু হয়। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানোর পরে পুলিশ বুঝতে পারে ওই দেহটি আসলে জয়ললিতার প্রাক্তন চালক কনগরাজের, যাকে চা বাগানে হামলা আর রক্ষী হত্যায় জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। যে গাড়িটি কনগরাজের বাইকে ধাক্কা মারে, তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার ভোর চারটে নাগাদ আরেকটি পথ দুর্ঘটনার খবর পায় পুলিশ। পার্শ্ববর্তী রাজ্য কেরালার থ্রিসুর থেকে কোয়েম্বাতুর যাওয়ার পথে একটি ট্রাকে গিয়ে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। ওই গাড়িতে ছিল কনগরাজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শ্যাম। তাকেও পুলিশ রক্ষী হত্যা মামলায় খুঁজছিল। ঘটনাচক্রে দুর্ঘটনায় শ্যাম বেঁচে গেছে, কিন্তু তার স্ত্রী ও শিশুপুত্রের মৃত্যু হয়েছে। ওদিকে জয়ললিতার বাগান আর বাংলোয় যে রাতে হামলা হয়, সেখান থেকে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তির নথির হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশ জানিয়েছে। তিনটি সুটকেসে ওইসব নথি রাখা ছিল বলে পুলিশ বলছে।

No comments

Powered by Blogger.