ট্রাম্প চাইলেই যুদ্ধ : উত্তর কোরিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাইলেই তারাও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এদিকে চীনের পক্ষ থেকেও উদ্বেগের সাথে জানানো হয়েছে, যেকোনো সময় আমেরিকা-উত্তর কোরিয়া যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। এএফপি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো ধরনের পরমাণু হামলার জবাব দিতে উত্তর কোরিয়া সক্ষম বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। স্থানীয় সময় শনিবার চোই রেয়ং-হে নামের উত্তর কোরিয়ার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এ মন্তব্য করেন। হে বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া যেকোনো ধরনের পরমাণু হামলার জবাব নিজস্ব পদ্ধতিতে পরমাণু হামলার মাধ্যমেই দেবে।’ এদিকে গত শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হ্যান সং রেয়ল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘আরো বিদ্বেষপূর্ণ ও আক্রমণাত্বক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, এর আগে বারাক ওবামার প্রশাসন অনেক শিথিল ছিল। হ্যান আরো জানান, উত্তর কোরিয়া মান ও সংখ্যার দিক দিয়ে পরমাণু বোমাকে উন্নত করবে। ট্রাম্প যুদ্ধ চাইলে তারাও প্রস্তুত আছে বলে জানান হ্যান।
বেশ কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। এর জন্য কোরিয়ার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকেই দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ৮ এপ্রিল পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে কোরীয় উপদ্বীপের দিকে পাঠানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন। উত্তর কোরিয়ায় উসকানিমূলক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জবাব দিতেই ওই যুদ্ধজাহাজ সেখানে যাচ্ছে বলে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। একদিন আগেই উত্তর কোরিয়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়। তবে ওই ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই বিস্ফোরিত হয় বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র। উত্তর কোরিয়ায় উসকানিমূলক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এই প্রথম নয়। এর আগে জাপান সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের ঠিক আগমুহূর্তে ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এ ছাড়া গত মাসে জাপান সাগরের দিকে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে তিনটি জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পড়ে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে পিয়ঙ্গান প্রদেশে অবস্থিত বাঙ্গিয়ন বিমানঘাঁটি থেকে জাপান সাগরের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেটিই ছিল দেশটির প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন জানিয়েছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে যাচ্ছেন তারা। গত বছর বেশ কয়েকবার পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায় উত্তর কোরিয়া। দেশটির একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও আক্রমণাত্মক বিবৃতি ওই অঞ্চলে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করছে বলে মনে করেন কিছু বিশ্লেষক। পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে ২০০৬ সাল থেকেই উত্তর কোরিয়ার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ।

No comments

Powered by Blogger.