বাবুলের সাবেক গাড়ি চালক ও দেহরক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ

মাহমুদা খানমকে কারা, কী কারণে খুন করেছে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বাবুল আক্তারের সঙ্গে একসময় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা দুই পুলিশ সদস্যের। এই হত্যা মামলার অন্যতম সন্দেহভাজন কামরুল সিকদার ওরফে মুছা (পলাতক) ও এহতেশামুল হক ওরফে ভোলাকে (হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহকারী, এখন কারাগারে) চেনেন না বলে তাঁরা তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেছেন। মুছা ও ভোলা চট্টগ্রামে বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। দুই পুলিশ সদস্য হলেন কনস্টেবল আবু তাহের ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফয়সাল উদ্দিন। গতকাল বুধবার দুপুরে মাহমুদা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. কামরুজ্জামান তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনারের দায়িত্ব পালনের সময় বাবুল আক্তারের সরকারি গাড়ির চালকের দায়িত্ব পালন করেন তাহের। আর বাবুলের দেহরক্ষীর দায়িত্বে ছিলেন ফয়সাল। তখন কনস্টেবল পদে ছিলেন তিনি। গতকাল দুপুরে দুজন চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। তাহের বর্তমানে নগর গোয়েন্দা পুলিশে এবং ফয়সাল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রামে কর্মরত আছেন। গত বছরের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করা হয় মাহমুদাকে। এই ঘটনায় তাঁর স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বাবুল ও মাহমুদার দাম্পত্য সম্পর্ক কেমন ছিল, কী কারণে মাহমুদা খুন হতে পারেন এসব বিষয় দুই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন।
ঘটনার পরও তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তঁরা কিছু তথ্য দিয়েছেন। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তদন্ত কর্মকর্তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে কনস্টেবল আবু তাহের প্রথম আলোকে বলেন, মাহমুদা হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে (২ জুন) তিনি আর বাবুল আক্তারের গাড়ি চালাতেন না। পদোন্নতি পেয়ে এসপি (পুলিশ সুপার) হিসেবে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে বাবুল আক্তার যোগ দেওয়ায় তিনি অন্য পুলিশ কর্মকর্তার গাড়ি চালাতেন। তবে খুনের ঘটনা শোনার পর তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তিনি বলেন, মাহমুদা কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন না। বাবুল আক্তারের সোর্স ভোলা ও মুছাকে চিনতেন না দাবি করে আবু তাহের বলেন, বাবুলের সঙ্গে তাঁদের কখনো দেখেননি তিনি। মাহমুদা হত্যার আট মাস আগে বাবুল আক্তারের দেহরক্ষীর দায়িত্ব পালন করেন ফয়সাল উদ্দিন। তিনিও প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ভোলা ও মুছাকে চিনতেন না। বাবুল আক্তারের সঙ্গে তাঁদের কখনো দেখেননি তিনি। মাহমুদা হত্যার ঘটনায় তাঁর স্বামী বাবুল আক্তার জড়িত বলে গত রোববার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন মাহমুদার বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন ও মা শাহেদা মোশাররফ। সেদিন তদন্ত কর্মকর্তা রাজধানীর মেরাদিয়ার ভূঁইয়াপাড়ায় মাহমুদার বাবার বাসায় যান। পরদিন বাবুল আক্তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই তাঁকে খুনি বানানো হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.