বাজারে ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসের পোশাক

ফাহিমা ইসলাম কলেজপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে আজিজ সুপার মার্কেটে ঘুরছেন। ফাল্গুনে মা-মেয়ে পোশাক পরবেন মিলিয়ে। ওই দিন সবাই সাজবে বসন্তের রঙে। আগে কেনাকাটার ধুম ছিল ধর্মীয় উৎসব ও পয়লা বৈশাখকেন্দ্রিক। এখন তা হয়ে উঠছে দিবসভিত্তিক। বিপণিবিতান ও ফ্যাশন হাউসগুলোও এখন প্রতিযোগিতায় নেমেছে পোশাকের রং ও ঢঙে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে দেখা যায়, শাহবাগের আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেটের দোকানগুলোর রংই বদলে গেছে। হলুদ-সবুজে একাকার। প্রায় সব দোকানই ফাল্গুনকে প্রাধান্য দিয়েছে। দেশাল-এর এ শাখার ব্যবস্থাপক পূর্ণিমা রায় বলেন, গত সপ্তাহে তাঁরা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে নতুন পোশাক তুলেছেন। এবার একটু আগেই মানুষ কেনাকাটা শুরু করেছে। তিনি আরও বললেন, অনেকে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহেও এসে নতুন পোশাকের খোঁজ করেছিলেন। কিছু কিছু দোকান ফাল্গুনের আবহ আনতে গাঁদা ফুল দিয়ে সাজিয়েছে। বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও বাহারি পোশাকের সমারোহ। কয়েকজন দোকানি বললেন, এই শুক্রবার থেকেই মূল কেনাকাটা শুরু হবে। তাই ক্রেতা টানতে এই ব্যবস্থা। অয়ন হাসান সাদা-হলুদ মিশ্রণের একটি পাঞ্জাবি কিনেছেন। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই তরুণ বলেন, ‘যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন আজিজে ঈদ আর বৈশাখের জন্য আসতাম। এখন তো প্রতি দিবসেই নতুন পোশাক পরা ট্রেন্ড হয়ে গেছে।’ আজিজে শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, কুর্তির বিভিন্ন নকশার পোশাক চলছে বেশি। মানভেদে এসবের দাম আট শ থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত। একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে পোশাকের সংগ্রহ খুব একটা দেখা না গেলেও দোকানিরা বলেন,
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই তা চলে আসবে। আড়ং ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে পোশাকের পাশাপাশি গয়না, জুতা, ব্যাগ এনেছে। এখানে ভিড়টাও বেশ। আসন্ন দিবসগুলো বরণ করে নিতে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। আড়ংয়ের এক বিক্রয়কর্মী বললেন, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের দিকেই তাঁদের নতুন সংগ্রহ এসেছে। প্রিয়জনকে দেওয়ার জন্য পাওয়া যাচ্ছে উপহারসামগ্রী। বসুন্ধরা শপিং মলের চিত্রটা একটু ভিন্ন। এখানকার বেশির ভাগ দোকান বিশ্ব ভালোবাসা দিবস সামনে রেখে তাদের পোশাকের সংগ্রহ এনেছে। ‘গ্রামীণ ইউনিক্লো’তে নতুনের মধ্যে লাল রঙের পোশাকের আধিপত্য। ফাল্গুনের জন্য এসেছে একটি নকশা। স্মার্টেক্স, ইয়েলো, ওয়েস্টিকসসহ অনেক দোকানেই ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। দেশী দশে আবার ফাল্গুনের আধিপত্য। একুশকে কেন্দ্র করেও কিছু পোশাক এসেছে। রায়হান আহমেদ পুরো পরিবার নিয়ে এসেছেন। তিন বছরের ছেলে, স্ত্রী ও নিজের জন্য কিনবেন একই রঙের পোশাক। রায়হান বলেন, ‘তিন বছর আগেও সম্ভবত এই রকম দিবস উপলক্ষে কিনতে হতো না। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবই করতে হচ্ছে। দিন দিন পোশাকগুলোর দামও বাড়ছে।’ পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে বিক্রি হচ্ছে গয়নাও। রঙ বাংলাদেশ থেকে গয়না দেখছিলেন একজন। তিনি খুঁজছেন কুর্তির সঙ্গে মানানসই অ্যান্টিকের গয়না।

No comments

Powered by Blogger.