গণ-ফাঁসির অভিযোগ নাকচ করলেন বাশার

সিরিয়ায় গত পাঁচ বছরে একটি কারাগারে ১৩ হাজার পর্যন্ত বন্দীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ অভিযোগ নাকচ করে দেন তিনি। এর আগে গত মঙ্গলবার সিরিয়ার ওই কারাগারে গোপনে প্রায় ১৩ হাজার বন্দীকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
লন্ডনভিত্তিক সংগঠনটি বলছে, ফাঁসিতে ঝোলানো ব্যক্তিদের অধিকাংশই বেসামরিক লোক ও প্রেসিডেন্ট বাশারের বিরোধী পক্ষের সমর্থক। মানবাধিকার সংগঠনটি অভিযোগ করে বলেছে, গণহারে ফাঁসির এই বিভীষিকাময় ঘটনা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল হতে পারে। রাজধানী দামেস্কের কাছে সেদনায়া কারাগারে এখনো এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকতে পারে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট বাশার ইয়াহু নিউজকে বলেন, অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন এ সংগঠনের গ্রহণযোগ্যতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। সংগঠনটি সব সময় পক্ষপাত ও রাজনীতিদুষ্ট। প্রমাণের সামান্যতম অংশও উল্লেখ না করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করাটা এ রকম একটা সংগঠনের জন্য লজ্জার। অ্যামনেস্টি বলেছে, তারা প্রতিবেদন তৈরিতে ৮৪ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তাঁদের মধ্যে কারারক্ষী, বন্দী ও বিচারকেরা রয়েছেন। তাঁরা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পূর্ণ ও সুষ্ঠু বিচার না করেই ফাঁসি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। অ্যামনেস্টি বলেছে, বিচারের জন্য বন্দীদের প্রথমে একটি সামরিক আদালতে নেওয়া হতো। সেখানে মাত্র এক থেকে তিন মিনিটে বিচারকাজ শেষ হতো। এ আদালতের একজন সাবেক বিচারকের উদ্ধৃতি দিয়ে সংগঠনটি বলেছে,
বন্দীদের কাছে জানতে চাওয়া হতো কথিত অপরাধ তাঁরা করেছেন কি না। ‘হ্যাঁ-না’ যে জবাবই আসুক, বন্দীকে দণ্ড দেওয়া হতো। মৃত্যুদণ্ডগুলো সিরিয়া সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়—মানবাধিকার সংগঠনটির প্রতিবেদনের এ ভাষ্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাশার বলেন, ‘এটা সঠিক নয়, নিশ্চিতভাবেই সঠিক নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন এক ভুয়া খবরের যুগে বাস করছি। আর এটা সবারই জানা।’ এই প্রতিবেদনকে সিরিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ও ‘পুরোপুরি অসত্য’ বলে নাকচ করে দিয়েছে। ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশারবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ১০ হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে বলছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।

No comments

Powered by Blogger.