প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ সু চি

মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রত্যাশিত উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন দেশটির গণতন্ত্রকামী নেত্রী ও ক্ষমতাসীন দল দ্য ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি। ব্রিটিশ এমপিদের জন্য ‘হাউস অব কমন্স’-এর তৈরি করা মিয়ানমারবিষয়ক হালনাগাদ তথ্যে এসব কথা বলা হয়েছে।
গত বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এনএলডি সরকার দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করতে পারেনি। বরং নতুন কোনো বিবাদের ঝামেলা এড়াতে সরকার সেনাবাহিনীকে সমীহ করে চলছে। যে কারণে রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর সেনাবাহিনীর হামলা ও নির্যাতন বন্ধে সরকার জোরালো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে ২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে গণতন্ত্রে উত্তরণের বড় সুযোগ বলে মনে করা হয়েছিল। নানা আশঙ্কা সত্ত্বেও সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিক মহলের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এনএলডি ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ১৫০ রাজনীতিককে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু একই সময়ে ‘কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি’র সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে দুজন মুসলিম নেতাকে জেলদণ্ড দেওয়া হয়। রাখাইন, শান ও কাচিন রাজ্যে সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তি স্থাপনে অং সান সু চি ব্যক্তিগতভাবে দায়িত্ব নেবেন জানিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়,
ওই সব রাজ্যের বিদ্রোহীদের অভিযোগ এনএলডি সরকার তাঁদের সঙ্গে যথাযথ কোনো পরামর্শ করেনি। রোহিঙ্গাদের ওপর সাম্প্রতিক হামলা প্রসঙ্গে বলা হয়, কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা ‘হারাকা আল ইয়াকিন’ বা ‘আকা মুল মুজাহিদীন’ নামে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলেছে। গত অক্টোবরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় তারা মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ছোট আকারের হামলা চালায়। এরপর থেকেই রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন শুরু হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৯ জানুয়ারি বিদেশ থেকে ফেরার পথে ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি এনএলডির উপদেষ্টা কো নি কে গুলি করে হত্যা করা হয়। রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগের কথাও তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। আছে দেশটির সামগ্রিক রাজনীতি ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির চিত্র।

No comments

Powered by Blogger.