বাবা-মায়ের অবর্তমানে অটিস্টিক শিশুদের দায়িত্ব নেবে রাষ্ট্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাবা-মায়ের অবর্তমানে অটিস্টিক শিশুদের লালন-পালনের দায়িত্ব রাষ্ট্রই গ্রহণ করবে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল শনিবার বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় উপলব্ধি করি, অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি কষ্ট মায়ের। তাই তাদের মা-বাবা যখন থাকবে না, তখন এদের কী হবে? এরা কোথায় যাবে? আমরা এ ব্যাপারে একটা উদ্যোগ নিচ্ছি। বাবা-মা যখন থাকবে না, তখন সরকারের পক্ষ থেকে তাদের লালন-পালনের ব্যবস্থা আমরা করব।’ শেখ হাসিনা আরও বলেন, অটিজমসহ সব ধরনের প্রতিবন্ধী শিশুর বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তাদের মেধা ও যোগ্যতা প্রকাশেরও অধিকার আছে। তাদের সেই সুযোগ দিতে হবে। প্রতিটি জেলা-উপজেলায় একটি করে অটিজম চিহ্নিতকরণ ও চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনে সরকারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরেও আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। ৬৪ জেলায় এবং ৩৯টি উপজেলায় ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে অটিজম কর্নার চালু করা হয়েছে, যা থেকে প্রায় ২০ লাখ প্রতিবন্ধী সেবা গ্রহণ করছে। ঢাকায় শিশু হাসপাতালসহ ১৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র স্থাপন করে অটিজম সমস্যাজনিত শিশুদের চিকিৎসা-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলা থেকে এই সেবা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, সেবা প্রদানকারীদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে, যেমন সেনানিবাসে প্রয়াস নামে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় করা হয়েছে। চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ প্রতিটি সেনানিবাসে আমি ইতিমধ্যে এই প্রয়াসের শাখা স্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছি।’ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিবন্ধীরা বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা প্রতিবন্ধীদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছে। বিশেষ অলিম্পিকে অনেক স্বর্ণপদকসহ দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছে। অটিজম ও স্নায়বিক সমস্যাজনিত জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন জাতিসংঘে অটিজম বিষয়ে মূল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকায় এই অনুষ্ঠানে তাঁর ধারণকৃত বক্তব্য শোনানো হয়। বক্তব্যে সায়মা ওয়াজেদ না জেনে কাউকে অটিস্টিক হিসেবে চিহ্নিত না করতে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. চৌধুরী মো. বাবুল হাসান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসরিন আরা সুরাত আমিন।

No comments

Powered by Blogger.