গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করছেন

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল‘জননিরাপত্তা বিধানে
গণমাধ্যম ও পুলিশের ভূমিকা’শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে
বক্তব্য দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল
হক (ডানে)। পাশে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ব্যক্তিরা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করেন। বল প্রয়োগ করেও লোকজনকে পদচারী-সেতু ও আন্ডারপাস ব্যবহারে বাধ্য করা যায় না। বাংলাদেশ পুলিশকে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয় বলে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ঔপনিবেশিক আমল থেকে বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালী মহল পুলিশকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে এক পরামর্শ সভায় এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার। গতকাল শনিবার গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় ওই সভার আয়োজক ছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ। সভার শিরোনাম ‘জননিরাপত্তা বিধানে গণমাধ্যম ও পুলিশের ভূমিকা’। এতে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশাজীবীরাও অংশ নেন। আলোচনা সভায় গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন গণমাধ্যমকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে অনেক বেশি সমন্বয় করে কাজ করছেন। আলোচিত ঘটনা উদ্ঘাটনে গণমাধ্যম পুলিশকে সহযোগিতা করছে। পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, পুলিশের হাতে বৈধ অস্ত্র থাকে, সেটির অপব্যবহার কাম্য নয়। তেমনি সাংবাদিকদের হাতে কলম থাকে, সেটির অপব্যবহারও কাম্য নয়। পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, পুলিশ ও গণমাধ্যমের লক্ষ্য একই। দেশের স্বার্থে এই দুপক্ষের মধ্যে সুসম্পর্ক দরকার। তিনি বলেন, পুলিশকে আইন প্রয়োগ করতে অনেক সময় বল প্রয়োগ করতে হয়। কিন্তু গণমাধ্যম বল প্রয়োগের বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করলেও কী পরিস্থিতিতে বল প্রয়োগ করা হয়েছে, তা প্রচার করে না। এতে জনমনে পুলিশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। মানবজমিন-এর সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, গণমাধ্যমকে বিশ্বাস করতে হবে পুলিশকে। থানায় মামলা নেওয়া হয় না। মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ বলেন, জননিরাপত্তা বিধানে গণমাধ্যম এবং জনগণকে পাশে থাকতে হবে। গণমাধ্যম অনেক সময় মিথ্যা তথ্য প্রচার করে জনগণকে উসকে দিয়ে পুলিশকে চাপে ফেলে দেয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন একুশে টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল। অনুষ্ঠানের সারসংক্ষেপ পড়ে শোনান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সাবেক তথ্য কমিশনার সাদেকা হালিম, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, সাংবাদিক আবেদ খান, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, যুগান্তর-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর সম্পাদক নঈম নিজাম, বাংলাভিশনের বার্তাপ্রধান মোস্তফা ফিরোজ, আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, শিল্পী ফকির আলমগীর প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.