ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ কেটে পুলিশের জন্য বহুতল ভবন- শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়ির গাছ কেটে পুলিশের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের প্রস্তুতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ’। তাঁরা অবিলম্বে এই পদক্ষেপ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন। গতকাল শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে এই মানববন্ধন হয়। গতকাল প্রথম আলোতে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ কেটে পুলিশের বহুতল ভবন!’ শিরোনামে ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি-সম্পর্কিত একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পুলিশ সেখানে ভবন নির্মাণ শুরু করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, পুলিশ ফাঁড়ির ওই জায়গাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের। আর পুলিশ বলছে, জায়গাটি তারা ১৯৩৪ সালেই গণপূর্ত অধিদপ্তরের কাছ থেকে নিয়েছে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে নিরাপত্তার জন্য বাবুপুরা ফাঁড়ি অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা হলেও এখন সেখানে পুলিশের জন্য স্থায়ী ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। এ জন্য রাতের অন্ধকারে শতবর্ষী গাছসহ অনেকগুলো গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এতে হাজার হাজার পাখির অভয়ারণ্য নষ্ট হয়েছে, জীববৈচিত্র্যের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তা ছাড়া এই এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করা হলে তা কার্জন হলের সৌন্দর্য নষ্ট করবে। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য, ঐতিহ্য ও পরিবেশের স্বার্থে এই ভবন নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আসফাক আহমদ, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহমেদ বশির, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। পরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করে উপাচার্যের দপ্তরে যান। উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপিতে তাঁরা উল্লেখ করেন, ‘আমরা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এই অমানবিক ও পরিবেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য স্থাপিত বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের বা অন্য কোনো সংস্থার জন্য কোনো ধরনের বহুতল ভবন নির্মাণ করা যাবে না।’

No comments

Powered by Blogger.