ঈদের বেতন-বোনাস না পেয়ে মালিকের সন্তানকে অপহরণ

রাজধানীতে বেতন ও ঈদের বোনাস না পেয়ে মালিকের ১৬ মাস বয়সের শিশুকে অপহরণ করেছে দুই কিশোর কর্মচারী। গতকাল সকাল ৯টায় যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে অপহৃত শিশু জুবায়েরকে উদ্ধার করে র‌্যাব-২। এ সময় এ ঘটনায় জড়িত দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর দুপুরে এ বিষয়ে র‌্যাব-২-এর প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে র‌্যাব-২-এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) এস এম মাসুদ রানা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুই কিশোর জানিয়েছেন, তারা জুবায়েরের পিতা মুহাম্মদ শামীমের হাজারীবাগের মানিব্যাগের কারখানায় চাকরি করে। ঈদের আগে বেতন-বোনাস না দিয়ে তাদের সঙ্গে নানা টালবাহানা করতে থাকেন শামীম। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শামীমের ছেলেকে অপহরণ করতে বাধ্য হয় তারা। অপহরণের পর ফোনে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। সিও এসএম মাসুদ রানা জানান, রমজান এবং তার বন্ধু স্বপন কেউই পেশাদার অপরাধী না। মূলত ক্ষোভ থেকেই তারা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তাদের কাছে কোন অস্ত্র বা ক্ষতিকর সরঞ্জামও পাওয়া যায়নি। কেবল যে মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করে তারা মুক্তিপণ দাবি করেছিল তা উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুদ রানা বলেন, সময়মতো বেতন দেয়া হলে এ অপরাধ করতো না কিশোররা। বরং কারখানার মালিক শামীমের বিরুদ্ধে দুটি অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি কারখানায় শিশুশ্রমিক নিয়োগ দিয়েছেন এবং সময়মতো বেতন-ভাতা পরিশোধ করেন না। গ্রেপ্তারকৃত দুই কিশোর বা তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান মাসুদ রানা। গত ১৪ই জুলাই দুপুরে জুবায়ের নিখোঁজ হয়। পরে ফোনে মুক্তিপণ দাবি করা হলে জুবায়েরের পিতা শামীম র‌্যাব-২-এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে ফোনের সূত্র ধরে যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তার ফ্লাইওভারের নিচ থেকে কৌশলে দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে জুবায়েরকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত রমজান আলীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের সুন্দিরবন গ্রামে। তার পিতার নাম হাসেম উদ্দিন। অপর কিশোর স্বপনের বাড়ি একই এলাকায়। তার পিতার নাম আবদুর রাজ্জাক। অন্যদিকে শিশু জুবায়েরের পিতা মুহাম্মদ শামীমের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার চালিতাকান্দি গ্রামে। তিনি স্ত্রী, সন্তান নিয়ে হাজারীবাগ এলাকায় থাকেন।

No comments

Powered by Blogger.