ঘরমুখোরা ব্যাকুল, গাড়ি চলে না চলে না... by মোছাব্বের হোসেন

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে আজ শুক্রবার সকাল নয়টা পর্যন্ত তীব্র যানজট ছিল। দুপুর ১২টার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে থেমে থেমে যানবাহন চলছে। মহাসড়কে গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে চন্দ্রা হয়ে কালিয়াকৈর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার এবং কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কে চন্দ্রা থেকে জিরানী পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট রয়েছে। এতে যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চন্দ্রা থেকে মির্জাপুরের কুর্নি পর্যন্ত প্রায় ২৪ কিলোমিটার এলাকায় চন্দ্রা, কালিয়াকৈর, গোড়াই, ধেরুয়া রেলক্রসিং, দেওহাটা, মির্জাপুর, শুভুল্যা, কদিম ধল্যা, পাকুল্যা, নাটিয়াপাড়া ও করটিয়া বাসস্টেশনে থেমে থেমে যানবাহন চলছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তোলা ছবি। ছবি: প্রথম আলো
যানজটে আটকা পড়া ঢাকা থেকে বগুড়াগামী বাসের চালক মহর আলী (৩৫) বলেন, ‘গতকাল রাত আটটার দিকে ঢাকার মিরপুর থেকে রওনা হন। সকাল আটটায় চন্দ্রা পৌঁছান। এত দীর্ঘসময় তাঁরা যানজটেই ছিলেন।’
ঠাকুরগাঁওগামী হানিফ পরিবহনের চালক আব্দুল মন্নাফ বলেন, গাবতলী থেকে বাস ছেড়েছিল গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টায়। গোটা রাস্তায় ছিল ছাড়া ছাড়া যানজট। রাত তিনটার দিকে গাড়িটি সাভারের নবীনগরের বড়াইবাড়ি এলাকায় এসে থেমে যায়। সেখানেই সকাল নয়টা পর্যন্ত তীব্র যানজট চলছে। তিনি বলেন, ‘গাড়ি আগায় না, পুরা রাস্তা জ্যাম।’
ঢাকা থেকে বুড়িমারীগামী বাস শুভ বসুন্ধরার চালক মোহাম্মদ সোলেমান বলেন, তিনিও গতকাল রাত পৌনে ১০টার দিকে গাবতলী থেকে বাস ছেড়েছিলেন। স্বাভাবিক নিয়মে বাস চললে আজ ভোর পাঁচটার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছার কথা। যানজটের কারণে সকাল আটটা পর্যন্ত চন্দ্রায়ই বসে আছেন।
তীব্র যানজটের কারণে স্থবির হয়ে আছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। মাঝে-মধ্যে গাড়ি চললেও তা চলছে ধীর গতিতে। বৃষ্টি আর কাদাপানিতে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। চালকেরা বলছেন, কাদাপানিতে সড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ায় গাড়ি ধীর গতিতে চালাতে হচ্ছে।
বৃষ্টিতে রাস্তায় কাদা। তাতে যানজট আরও বেড়েছে। ছবিটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস থেকে আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
গরমে অতিষ্ঠ অনেক যাত্রী বাস থেকে নেমে এখানে সেখানে দাঁড়িয়ে। পোশাকশ্রমিক আবু যাবেন গাইবান্ধায়। যানজটে হতাশ তিনি। সকাল নয়টার দিকে তিনি বলেন, ‘ঈদের পরদিন চইলা আসতে হইব। রাস্তায়ই যদি একদিন থাকা লাগে, তাইলে কখন যামু আর কখন আসমু।’
ঢাকা লালমনিরহাটে যাবেন সৌরভ। যানজটে ক্ষুব্ধ তিনি। তাঁর কথা, ‘ঈদের আগে যোগাযোগমন্ত্রী বলেছিলেন, মহাসড়কে যানজট থাকবে না। কই, তাঁর কথা তো সত্যি হলো না।’
মির্জাপুরের ট্রাফিক পরিদর্শক সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘পোশাক কারখানা ছুটির পর শ্রমিকেরা বাড়ির দিকে রওনা হওয়াতে যানবাহনের চাপ বাড়ে। এ ছাড়া কয়েকটি স্থানে যানবাহন বিকল হওয়ার পাশাপাশি চালকেরা এলোপাতাড়ি যানবাহন চালানোর কারণে যানজট লাগে। আজ সকাল থেকে যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল শুরু হয়েছে।’
গাজীপুরের কোনাবাড়ি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু দাউদের ভাষ্য, বৃষ্টির কারণে রাস্তা কর্দমাক্ত হওয়ায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না। এতে থেমে থেমে যানজট লাগছে।

No comments

Powered by Blogger.