রাজধানীতে তরুণীকে গণধর্ষণ- নিরাপত্তাহীনতার উদ্বেগজনক উদাহরণ

মহানগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একটু নাজুক হয়ে গেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। রাজধানীতে টহলদারি ও নজরদারি ব্যবস্থায় একটা শিথিল অবস্থার সুযোগ দুর্বৃত্ত ও সমাজবিরোধীরা নিচ্ছে কি না, তা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখার দাবি রাখে। অপরাধের ঘটনা হয়তো খুব অস্বাভাবিক নয়, কিন্তু কূটনৈতিক এলাকাসংলগ্ন যমুনা ফিউচার পার্কে কর্মরত গারো তরুণীর জীবনে যা ঘটে গেল, তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য ও রোমহর্ষক।
গভীর উদ্বেগের কথা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা খোদ রাজধানীর জনাকীর্ণ ব্যস্ত সড়কে চলন্ত মাইক্রোবাসে নিরুদ্বেগচিত্তে একটি মেয়েকে গণধর্ষণ করার পর তাঁকে উত্তরায় ফেলে নিরাপদে পালিয়ে যেতে পেরেছে। পুলিশের উচিত হবে না এটিকে নিতান্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার।
বিবেচনায় নিতে হবে দুর্বৃত্তদের বেপরোয়া মনোভাব এবং আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর উপস্থিতিকে পাত্তা না দেওয়ার মনস্তত্ত্ব। এই নরপশুরা ধরেই নিয়েছিল যে চলন্ত মাইক্রোবাসটি কেউ চ্যালেঞ্জ জানাবে না এবং তাদের অনুমান মিথ্যে হয়নি। ধরেই নেওয়া চলে সন্দেহভাজন মাইক্রোবাসটির কাচঢাকা ছিল এবং তা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের চোখ এড়িয়ে যাওয়ার কথা নয়। সাধারণভাবে অনুমেয়, যানজটপূর্ণ রাস্তায় দুর্বৃত্তরা প্রায় দুই ঘণ্টা গাড়িটিকে চলমান রাখলেও নিরাপত্তাপ্রহরীদের দ্বারা কোথাও বাধাগ্রস্ত বা তল্লাশির সম্মুখীন হয়নি।
এই ঘটনা নগরে সিসিটিভির ব্যবহার আরও বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করছে। সিসিটিভির মাধ্যমে পুরো শহরকে নিয়ন্ত্রিত করা সম্ভব হলে এ ধরনের অপরাধের তদন্তে তা বেশ সহায়ক হতে পারে। এটা ইতিবাচক যে, ঢাকা উত্তরের মেয়র এবং গুলশান পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন। এখন চ্যালেঞ্জ হলো দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে বিচারের জন্য সোপর্দ করতে পারা। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা তাঁদের পক্ষে সম্ভব সব ধরনের পদক্ষেপ দ্রুততার সঙ্গে গ্রহণ করবেন। সেই সঙ্গে মেয়েটির চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও সরকারকে নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.