নেপালে এবার বন্যা, ভূমিধস

দুর্যোগ যেন নেপালের পিছু ছাড়ছে না। ভূমিকম্প, বৃষ্টি, ভূমিধস- একটার পর একটা দুর্যোগ লেগেই আছে। এরই মধ্যে আরও একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা চরম আকার ধারণ করেছে। যে কোনো সময় বন্যা হতে পারে নেপালে। ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি যে ভূমিকম্পগুলো হয়েছে, তার প্রভাবে সংঘটিত হতে পারে একাধিক ভয়াবহ ভূমিধস। বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার ভূমিধস ঘটলে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়। এতে করে অকস্মাৎ ভয়াবহ বন্যার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে শনিবার মধ্যরাতে নেপালের পশ্চিমাঞ্চলে মায়াগদি জেলায় ভূমিধসে কালী গন্ধকি নদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে হাজার হাজার আতঙ্কিত লোকজন ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ১৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত এ নদীটি ভূমিধসের পর একটি হ্রদে পরিণত হয়েছে। গতকাল মধ্যরাতে হঠাৎ করেই ভূমিধস হয়। এতে নদীর পানির উচ্চতা ২০০ মিটার বৃদ্ধি পায়। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা লক্ষ্মী প্রসাদ ধাকাল বলেন,
‘আমার ওই এলাকার লোকজন, বিশেষ করে যারা নদী তীরবর্তী এলাকায় বাস করছে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলেছি।’ এ ঘটনায় ওই এলাকায় অবস্থিত নেপালের সবচেয়ে বড় পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে কর্মকর্তারা আশংকা প্রকাশ করেছেন। সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারে পুরো এলাকায় জরিপ চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে দ্রুত বর্ধনশীল হ্রদের কাছেও সামরিক বাহিনী পাঠানো হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, পানি বৃদ্ধির কারণে যে কোনো সময় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিতে পারে। কালী গন্দকি নদী নেপাল থেকে ভারতে প্রবেশ করে গঙ্গার সঙ্গে মিশেছে। নেপালের ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে-পর্বত, সিয়াংজা, গুলমি, পালপা, নাবালপারসি এবং চিতবান। ফের তিন ভূমিকম্প কাঁপল কাঠমান্ডু : ২৫ এপ্রিলের তীব্র ভূমিকম্পের ঠিক একমাস পর, রোববার আবারও তিন-তিনটি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল কাঠমান্ডু ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা। যদিও কম্পনের তীব্রতা ছিল সামান্যই। তবে গত একমাসে ভূকম্পন ও আফটারশকে জেরবার নেপালবাসীর কাছে ভূমিকম্প মানেই একটা ত্রাস। রোববার সকাল ৭.০৬ মিনিটে প্রথম ভূকম্পনটি অনুভূত হয়, রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ছিল ৪.২। এর উৎসস্থল ছিল দোলাখা অঞ্চল। দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি হয় সকাল ১০.৩৮ মিনিটে। এবারের তীব্রতা ছিল ৪.৪। এ কম্পনের উৎসস্থলও ছিল দোলাখাই। এরপর পৌনে ১২টা নাগাদ তৃতীয় কম্পনটি অনুভূত হয়। ৪.২ তীব্রতার এ ভূমিকম্পের উৎসস্থল সিন্ধুপালচক।

No comments

Powered by Blogger.