ছাত্রলীগের সহিংসতা ও লুটপাট- দায় বহন করতে হবে সরকারকেই

ঘোষিত অঙ্গসংগঠন না হলেও ছাত্রলীগ সরকারি দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন। এরাই যখন সিলেটে গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক রজতকান্তি গুপ্তকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে, চট্টগ্রাম বিদ্যালয়ে দুটি হলের শতাধিক কক্ষে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়, তখন আসলে সরকারই আঘাতপ্রাপ্ত হয়। প্রশাসন ও সরকার যত দ্রুত এই সত্য উপলব্ধি করবে ততই মঙ্গল।
গত শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপভিত্তিক সংগঠনের মধ্যে ক্রিকেট খেলার সময় একটি তুচ্ছ ঘটনায় প্রথমে ছাত্রশিবিরের কিছু কর্মীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি ও পরে শিবির নিয়ন্ত্রিত দুটি হলে ছাত্রলীগ ও শিবির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দুটি হলের বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর ও সাধারণ ছাত্রদের ল্যাপটপ, মুঠোফোন, ট্যাব ও অন্য জিনিসপত্র লুটপাট করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের গত ছয় বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে সাত-আটবার, আর ছাত্রলীগ নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে শতাধিকবার। এমনকি গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর নিজেদের মারামারিতে ছাত্রলীগের একজন কর্মী নিহত হন। এর বিচার আজও হয়নি। এবারের সংঘর্ষে সাধারণ ছাত্রদের ল্যাপটপসহ দামি জিনিসপত্র যে লুট হয়ে গেল, তার বিচার ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা না করলে এর দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শেষ পর্যন্ত সরকারের ওপরই পড়বে।
সিলেটে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে একটি কনসার্টে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী বিনা টিকিটে ঢুকতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনার জের ধরে সিলেট গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। সিলেটের ছাত্রলীগ বরাবর সহিংস ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। ২০১১ সালে সিলেট এমসি কলেজের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাস পোড়ানোর গুরুতর অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা আজও হয়নি।
আধিপত্য বিস্তারের জন্যই এত সহিংসতা। আধিপত্য থাকলে লুটপাট ও চাঁদাবাজি সহজ হয়। এই কায়েমি স্বার্থ ভাঙতে হবে। সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্যই এটা দরকার।

No comments

Powered by Blogger.