চট্টগ্রামে ঘাতক বাবা গ্রেফতার দায় স্বীকার

কক্সবাজারের চকরিয়ায় নিজের তিন শিশু মেয়েকে ঘুমন্ত অবস্থায় জবাই করে হত্যার ঘটনায় বাবা আবদুল গণিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোর ৫টার দিকে চকরিয়া থানা পুলিশ চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে। গণি নিজেই তিন মেয়েকে জবাই করে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছেন। কক্সবাজার সদর সার্কেলের এসএসপি মাসুদ আলম জানান, ওই তিনি শিশু হত্যার ঘটনায় শনিবার ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে স্বামী আবদুল গণি, তার ছোট ভাই আবদুল হামিদ ও তার মা মনোয়ারা বেগমকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
চকরিয়া থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, মোবাইল টেকনোলজি ও সোর্স ব্যবহার করে চট্টগ্রাম শহরে অভিযান চালিয়ে সোমবার ভোর ৫টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিয়ের পর থেকে কোনোদিন ভালোভাবে ঘুমাতে পারিনি। আমার পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকতো। পারিবারিক ঘটনা নিয়ে যেখানেই গিয়েছি শুধুই মার খেয়েছি। স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে জানান, এ অপমান সইতে না পেরে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছি।
গণি বলেছেন, তিন মেয়েকে হত্যার পর একদিনও ঘুমাতে পারিনি। খুবই খারাপ লেগেছে। ঘটনার দিন পুলিশ লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় দূর থেকে শুধু একবার মেয়েদের দেখার চেষ্টা করেছি। থানায় হাজির হয়ে ধরা দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু লোকজন আমাকে মেরে ফেলবে বলে ভয়ে সাহস করিনি। গণি জানান, ঘটনার দিন সারাদিন চকরিয়ায় ঘুরেছি। আমার কিছু নিকট আত্মীয়ের পরামর্শে এ দিন রাতে চট্টগ্রামে চলে যাই। সেখানে এক বোন থাকে। ওই বোনের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম। চকরিয়া উপজেলার বদরখালীর নিদান তরানি চৌধুরী পাড়ায় শনিবার রাতে আবদুল গণি নিজ হাতেই ধারালো দা দিয়ে নিজের তিন শিশু মেয়ে আয়েশা ছিদ্দিকা চম্পা (১১), শিরো জান্নাত শিউলি (৮) ও সারাবান তহুরা বেলীকে (১৮ মাস) জবাই করে হত্যা করে।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি পুরো দেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবদুল আওয়াল জানান, রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে। আবদুল গণি বদরখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আবদু করিমের ছেলে। বিয়ের পর তিনি একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের নিদান তরানি চৌধুরী পাড়ায় শ্বশুর বাড়ির ভিটের এক পাশে আলাদা ঘর নির্মাণ করে থাকতেন।
ফাতেমা বেগম জানান, ঘটনার দিন তার বড় ছেলে নানার বাড়িতে ছিল। বাড়িতে থাকলে তাকেও হয়তো প্রাণ দিতে হতো।

No comments

Powered by Blogger.